আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:০ এএম | অনলাইন সংস্করণ বগুড়ায় ৩ দফা দাবিতে ১০ দিন
বগুড়া আইএইচটির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১৪ দিনের মাথায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত উল হাসিনকে বাগেরহাট ম্যাটস্ এর সিনিয়র লেকচারার হিসেবে বদলি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ পারসোনাল-১ শাখা (উপসচিব) মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত এক আদেশে বগুড়া আইএইচটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত উল হাসিনকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে বাগেরহাট ম্যাটস্ এর সিনিয়র লেকচারার হিসেবে যোগদান করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ৮ম কর্মদিবসের মধ্যে ‘স্ট্যাান্ড রিলিজ’ বলে গণ্য হবে। একই আদেশে বগুড়া আইএইচটি’র সিনিয়র লেকচারার ডা. মো: ওমর ফারুক মীরকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে বগুড়া ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ঘটনায় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের গঠিত তদন্ত কমিটি আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিনভর তদন্ত করেছেন। তদন্ত কমিটিতে অল্টারনেটিভ মেডিসিনের প্রজেক্ট ম্যানেজার ডা. গওসুল আজিম চৌধুরীকে প্রধান ও দুইজন সদস্য হলেন এসোসটেন্ট প্রফেসর (স্বাস্থ্য শিক্ষা) ডা. হাবিবুর রহমান এবং আইএইচটি বগুড়ার সিনিয়র লেকচারার ডা. মো: আব্দুল কাদের। তদন্ত কমিটি আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেন। তারা ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
সন্ধ্যার পর অভিযুক্ত সজল ঘোষ ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাসের যে রুম দখল করে ছিল সেই রুম পরিদর্শন করেন
পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে। উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর যাবৎ ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধসহ লাগাতর আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। তাদের অভিযোগ বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সজল ঘোষ আইএইচটির ছাত্রাবাসের একটি রুম দখল করে সেখানে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, তাদেরকে দিয়ে শরীর মালিশ করে নেয়া, বহিরাগতদের নিয়ে এসে মাদক সেবন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় পাশ করে দেয়ার কথা বলে টাকা আদায়, তাদেরকে মারপিটসহ নির্যাতন এবং টাকা না দিয়েই হোস্টেলের ক্যান্টিনের খাবার খেয়ে আসছিল।
ক্যান্টিনের বকেয়া টাকা চাইতে গেলে গত ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও হোস্টেলের মিল ম্যানেজার আমিনুল ইসলামকে মারধর করে সজল ঘোষ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সদ্য বদললিকরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সজল ঘোষ অত্যন্ত দাপটের সাথে তার কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিল। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও এই মারধরকে কেন্দ্র করে ওই দিন শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করে। প্রায় দু ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখার পর তারা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। এরপর থেকেই তারা ক্লাস বর্জন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের অপসারণসহ ৩ দফা দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিল।
অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আমায়াত উল হাসিনকে অপসারণ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজল ঘোষকে গ্রেফতার ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দাবিতে ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন চলার এক পর্যায়ে গত ২ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সজল কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান। কিন্তু মামলার আট দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত সজল ঘোষকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবি অধ্যক্ষের অপসারণ সম্পর্কেও কোন অগ্রগতি হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববারও সড়কে নেমে আসে।