আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৯: ০৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ  ট্রাক জ্বালানি

গাজায় দিনে দুই ট্রাক জ্বালানি ঢুকতে দেবে ইসরায়েল

গাজায় প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেবে ইসরায়েল। ছবি : বিবিসি  গাজায় প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতি দুই দিনে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার লিটার জ্বালানির অনুমতি প্রদান করা হবে।

এর বেশির ভাগই পানি এবং স্যানিটেশন সরবরাহে জাতিসংঘকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে এবং বাকিটা মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য। যেগুলো জ্বালানির অভাব থাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় সময় শুক্রবার গাজার যোগাযোগ সরবরাহকারী সংস্থাটি বলেছে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইউএনআরডাব্লিউএ’-এর মাধ্যমে কিছু জ্বালানি পাওয়ার পর তাদের পরিষেবাগুলো আবার চালু করতে পেরেছে।

মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এই জ্বালানি চুক্তির জন্য ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ওপর যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করেছে। চুক্তির জন্য ইসরায়েল আগেই নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছিল বলে কর্মকর্তারা বলেছেন। কিন্তু দুটি কারণে ইসরায়েল দেরি করেছে।  ট্রাক জ্বালানি

Buy Database Online – classy database

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছিলেন, দক্ষিণ গাজায় জ্বালানি আসলে শেষ হয়নি।

এর জন্য তারা অপেক্ষা করতে চেয়েছিল। এ ছাড়া জ্বালানি দেওয়ার আগে প্রথমে জিম্মি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল। ‘ইউএনআরডাব্লিউএ’-এর প্রধান বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছিলেন, জ্বালানির অভাবের কারণে তাদের সব কার্যক্রম স্থগিত করতে হতে পারে। সর্বশেষ পরিস্থিতি প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, ‘মৌলিক মানবিক কার্যক্রমের জন্য প্রতিদিন এক লাখ ৬০ হাজার লিটার জ্বালানির প্রয়োজন।

এর আগে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছিলেন, জ্বালানি রাফাহ ক্রসিংয়ের মাধ্যমে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার বেসামরিক জনগণের কাছে জাতিসংঘের মাধ্যমে যাবে। তবে শর্তে বলে দেওয়া হয়েছে, জ্বালানি যেন হামাসের কাছে না পৌঁছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, জ্বালানি দেওয়ার উদ্দেশ্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে সহায়তা দেওয়া। যাতে এই অঞ্চলে মহামারির প্রাদুর্ভাব রোধ করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার গাজা উপত্যকায় উদ্ভূত মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) সতর্ক করে গাজায় রোগ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

clipping path tech

যেখানে জ্বালানির অভাব ও ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং স্যানিটেশন সুবিধাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ফিলিস্তিন অঞ্চলে ডাব্লিউএইচওর প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্ন বলেছেন, ৭০ হাজারের বেশি মানুষ তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভুগছে। তাছাড়া ৪৪ হাজারের বেশি শিশুর ডায়রিয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, পরিসংখ্যানে উঠে আসা সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। গাজায় জ্বালানির অভাবে ভুগছে হাসপাতালগুলো। রোগী মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে চলছে। এ ছাড়া বাড়ি, স্যানিটেশন, পরিবহন এবং যোগাযোগ অবকাঠামোর জন্য জ্বালানি প্রয়োজন। হামাস তেল চুরি করতে পারে ও সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারে এই যুক্তি দেখিয়ে ইসরায়েল জ্বালানি প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছিল।

সর্বশেষ যুদ্ধের আগে ইসরায়েল গাজায় বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ করত। যুদ্ধর পর ইসরায়েল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এরপর গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের বালাতা শরণার্থীশিবিরের একটি ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা প্রতিবেদনগুলো তদন্ত করে দেখেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ইসরায়েলকে বলেছেন, ‘পশ্চিম তীরে উত্তেজনা কমাতে এবং বসতি স্থাপনকারী চরমপন্থী সহিংসতার ক্রমবর্ধমান মাত্রার মোকাবেলা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ দরকার।’গাজায় ত্রাণবাহী কিছু ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। মিসর-গাজা সীমান্তের রাফাহ ক্রসিংয়েছবি: এএফপি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জ্বালানি ঢুকতে দিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল।

metafore online

দেশটি জানিয়েছে, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি তেল ঢুকতে পারবে।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। এর ফলে চরম জ্বালানিসংকটে ধুঁকতে থাকা গাজাবাসীর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতি দুই দিনে গাজায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার লিটার জ্বালানি তেল প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।

এই জ্বালানি তেলের বেশির ভাগই মানবিক সহায়তা দেওয়ার ট্রাক চলাচল, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পানি ও স্যানিটেশনের সুবিধা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘকে দেওয়া হবে। বাকিটা ব্যবহার করা হবে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা নির্বিঘ্ন রাখার জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় জ্বালানি সরবরাহের এ সিদ্ধান্ত সপ্তাহখানেক আগেই নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ঘোষণা করতে বিলম্ব হওয়ার পেছনে দুটি কারণ ছিল। প্রথমত, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে জ্বালানি ফুরিয়ে যায়নি, যুক্তরাষ্ট্রকে এমনটাই জানিয়েছিলেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। দ্বিতীয়ত, এই সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক কিছু বন্দীর মুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিল ইসরায়েল।

তবে গত বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্মবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এই বলে সতর্ক করে যে চরম জ্বালানিসংকটের কারণে গাজায় তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ হতে বসেছে। এর পরপরই গাজায় জ্বালানি সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার কথা জানাল ইসরায়েল।

সূত্র : বিবিসি

সম্পর্কিত খবর

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version