আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ২২:২৯, পিএম | অনলাইন সংস্করণ প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু
মালদ্বীপের অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. মোহাম্মদ মুইজু। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৫টায় রাজধানী মালে সিটির রিপাবলিক স্কয়ারে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান দেশটির প্রধান বিচারপতি আহমেদ মুথাসিম আদনান।
অনুষ্ঠানে মোট ৪৬টি দেশের প্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের বিশেষ দূত উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দ্বীপ রাষ্ট্রে সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ নির্বাচনে এবার ভারত বিরোধী অবস্থান নিয়ে জোর প্রচারণা চালান একসময় মালের মেয়রের দায়িত্ব পালন করা মুইজ্জু। এই প্রচারণা কাজেও লাগে।
প্রতিদ্বন্দ্বী ইব্রাহিম সোলিহকে ১৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন তিনি।মালদ্বীপের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু।
তিনি এর মাধ্যমে মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রের অষ্টম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রিপাবলিক স্কয়ারে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে নতুন রাষ্ট্রপতি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ লতিফ শপথ নেন। শপথ পরিচালনা করেন প্রধান বিচারপতি আহমেদ মুতাসিম আদনান।
শপথ অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিসহ অসংখ্য মানুষ উপস্থিত ছিলেন। ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু শপথ অনুষ্ঠানের পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি ন্যায়পরায়ণ থাকব। চুরি ও দুর্নীতিকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করব।’মালদ্বীপের স্বাধীনতার কথা তুলে ধরে মুইজ্জু জানান, তিনি মালদ্বীপকে এমন একটি দেশে পরিণত করবেন যা বাইরের সব সাংস্কৃতিক প্রভাব বলয় থেকে হবে মুক্ত।
এদিকে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অতিথিদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি ড. মোহাম্মদ মুইজ্জু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ লতিফ ইসলামিক সেন্টারে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। ইমাম হিসেবে ইমামতি করেন নতুন প্রশাসনের ইসলামিক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ শহীদ আলী সাঈদ। নামাজে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট দুজনকেই সামনের সারিতে দেখা গেছে। এটি মালদ্বীপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটনা।
অতীতে শপথ নেওয়া রাষ্ট্রপতিরা তাদের মন্ত্রিসভা নিয়োগের জন্য তাদের শপথ নেওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে রওনা দেন। পরে সন্ধ্যায় ৭টা ৪৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ নেওয়ার পর্ব শুরু হয়।
নতুন প্রশাসনের সূচনা উপলক্ষে রাত ৯টায় ইজ্জুদ্দীন জেটির কাছে একটি আতশবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিশেষ প্রতিনিধি এবং স্টেট কাউন্সিলর শেন ইজিন,
সেশেলসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আফিফ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিশেষ প্রতিনিধি এবং বুসান সিটির মেয়র পার্ক হিউ জুনও, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রতিনিধি ও উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোমুরা মাসাইসোও প্রমুখ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।মালদ্বীপের অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন মোহাম্মদ মুইজ্জু। নতুন প্রেসিডেন্টকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি মুথাসিম আদনান।
খবর এএফপি’র। অনুষ্ঠানে ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ লতিফও শপথ নেন। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) রিপাবলিক স্কয়ারে অনুষ্ঠিত গণ মজলিসের বিশেষ অধিবেশনে শপথ গ্রহণ করেন তারা। এ সময় মালদ্বীপে বিদেশি সেনাবহরের কোনো স্থান হবে না বলে আবারও স্পষ্ট জানিয়ে দেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।
দেশ থেকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে উৎখাত করা হবে।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ মুইজ্জু বলেছেন, মালদ্বীপ থেকে বিদেশি সৈন্যদের ফেরত পাঠানো হবে। একই সঙ্গে তার দেশে থাকা ভারতীয় সৈন্যদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
খবর আল জাজিরা শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মালদ্বীপের নতুন প্রেসডেন্ট মুইজ্জু ব্যাপক চীনপন্থি। তবে আগের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মেদ সলিহ ছিলেন মূলত ভারতপন্থি। যদিও তিনি ক্ষমতায় আসার পর বলেছিলেন, চীন ও ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
মুইজ্জু বলেন, মালদ্বীপের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট চিহ্ন আঁকা হবে। এজন্য বিদেশি সৈন্যদের ফেরত পাঠানো হবে। আমি শুধু বিদেশিদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখব। সে কাছের কিংবা দূরের হোক।ভারত এবং চীন উভয় দেশই মালদ্বীপে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। গত সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) থেকে জয়লাভ করেন মুইজ্জু।
এরপরই তিনি ভারতীয় সৈন্য দেশ থেকে পাঠানোর জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। মালদ্বীপে প্রায় ৭৫ ভারতীয় সৈন্য রয়েছে। এছাড়া দেশটিতে প্রায় ২১ হাজার ভারতীয় রয়েছে। মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাবের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ভারত সব সময়ই মালদ্বীপের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিত সম্পর্কের গুরুত্ব দেয়। এদিকে প্রেসিডেন্টে মোহাম্মেদ মুইজ্জার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে চীন ও ভারত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠিয়েছে।