ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে আগ্রহ দেখাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় কাজও করছে দেশটি। এর মধ্যে নিজেদেরে ভূখণ্ডে ইসরায়েলিদের ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের অনুমতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনি ও আরব আমেরিকানদের উদ্বেগ সত্ত্বেও এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশটি। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর আলজাজিরার।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে কোহেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা ছাড়া প্রবেশের অনুমতি (ভিডব্লিউপি) দেশবাসীর জন্য এক বিশাল আনন্দের সংবাদ। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুসারে আগামী নভেম্বর থেকে এ সুবিধা পাবে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের ভিডব্লিউপি বা ভিসা ছাড়া ভ্রমণের অনুমতি পাওয়া নিয়ে অফিসিয়ালি কোনো ঘোষণা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তবে সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আগামীতে জানানো হবে।

সোমবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) মুখপাত্র আলজাজিরাকে ইমেইলে জানান, আমরা এখনো বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছি না। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ডিএইচএস বিষয়টি নিয়ে আগামীতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

এদিকে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা ছাড়া প্রবেশের এমন অনুমতির বা ভিডব্লিউপি সুবিধা দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আরব আমেরিকান সিভিল রাইট অ্যাডভোকেটস।

আমেরিকান-আরব অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন কমিটির (এডিসি) অ্যাডভোকেসি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক আবেদ আইয়ুব সোমবার এক বিবৃতিতে আল জাজিরাকে বলেন, এ ধরনের বিষয়টি সত্য হয়ে থাকলে এটি হবে অনেক ভয়ংকর সিদ্ধান্ত।

এর আগে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে ‘দ্বিরাষ্ট্র’ভিত্তিক সমাধানের পক্ষে মত দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সংঘাত নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

বাইডেন বলেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিন সংঘাত চূড়ান্ত নিরসনের জন্য দুই দেশের নাগরিকদের নিয়ে আলাদা দেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

এরও আগে গত বছর সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছিলেন, সৌদি আরব ইসরায়েলকে একটি ‘সম্ভাব্য মিত্র’ হিসেবে দেখে। তবে একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তার সমস্যাগুলো সমাধান করা উচিত।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ গত জুনে তার মার্কিন সমকক্ষ অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এই অঞ্চলের স্বার্থেই প্রয়োজন, এটি সবার জন্য উল্লেখযোগ্য সুবিধা বয়ে আনবে। একইসঙ্গে তিনি ফিলিস্তিনিদের মর্যাদা ও ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য একটি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথ খোঁজার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেছিলেন।

সূত্র : কালবেলা

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version