আপডেট : জানুয়ারি ২৬ ২০২৩, ১৪:১৩ এএম  |  অনলাইন সংস্করণ    মাঠে ২০ হাজার পুলিশ

আগুন প্রতিরোধে মাঠে ২০ হাজার পুলিশ থামাতে হবে চোরাগোপ্তা হামলা-বাসে আগুন


সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে টানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। গত সপ্তাহে একদিন হরতাল ও তিনদিন অবরোধের পর চলতি সপ্তাহের শুরুতেই আবারও চলছে অবরোধ। আজ রোববার (৫ নভেম্বর) ভোর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি। প্রথম ধাপের অবরোধে রাজধানী ও আশপাশের ১৯ জায়গায় বিভিন্ন যানবাহনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তবে এবার যানবাহনে আগুন দেওয়া রুখতে আগে থেকেই নানান পদক্ষেপ নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। যদিও এরই মধ্যে শনিবার রাতে, রোববার সকাল ও রাতে রাজধানীর বেশ কয়েক জায়গায় বাসে আগুনের তথ্য এসেছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজধানীতে তিনটি বাসে আগুনের তথ্য মিলেছে।

এর মধ্যে মিরপুরে দুটি ও বাংলামোটরে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পুলিশের নানান পদক্ষেপেও বাসে আগুন দেওয়া যেন কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। সারা দেশে আগামী দিনগুলোতে অবরোধসহ বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে চোরাগোপ্তা হামলা হতে পারে। এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

clipping path tech

গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের বড় আশঙ্কা চোরাগোপ্তা হামলা। সামনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যত ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া দরকার, আমরা নিয়েছি। সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা গত ১১ দিনে হরতাল ও অবরোধে ১১৫টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ গতকাল রাত ১১টার দিকে মালিবাগ আনসার ক্যাম্পের কাছে পার্ক করা বাহন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা

এর আগে হামলা ও নাশকতার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি-জামায়াতের দেড় হাজারের বেশি সন্দেহভাজন নেতাকর্মীকে শনাক্ত করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি ফুটেজ), প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইল ক্যামেরায় থাকা ভিডিও ফুটেজসহ বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনাক্ত করা হয় তাঁদের। গ্রেপ্তার করা অন্তত ৫০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে চোরাগোপ্তা হামলা চালানোর নির্দেশ রয়েছে তাঁদের। তাঁরা মনে করছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাঁদের প্রধান বাধা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। গত ২৮ অক্টোবর পল্টনে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল হক পারভেজ হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দির সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে বিএনপি নেতাকর্মীর সংখ্যা। ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৬৬ জন হলেও গতকাল পর্যন্ত বন্দির সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৪৪৯। কারা সূত্র এই তথ্য জানায়। গত সোমবার পর্যন্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিল ১১ হাজার ৮১৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগার কেরানীগঞ্জে ছিল ১১ হাজার ৫৪ জন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি ধারণক্ষমতা চার হাজার ৫৯০ জন। বর্তমানে ১০ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছে।

কারাগারে বন্দির সংখ্যা বাড়ায় কিছু বন্দিকে কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে সম্প্রতি নির্মিত তিনটি পুরুষ বন্দি ভবনে পাঠানো হচ্ছে

কারাবন্দি নেতাদের মধ্যে ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু অসুস্থ থাকায় কারাগারে যাওয়ার পর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে প্রিজন সেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কারাগারে আরো রয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, জুরাইনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর হোসেন মীরু এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ বেশ কিছু বন্দি। কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কারাগারে বন্দির সংখ্যা বেড়েছে।

metafore online

তবে কারাবিধি অনুসারে বন্দিদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ৬৮ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৪২ হাজার ৮৬৬ জন। সেই হিসাবে ৮০ থেকে ৯০ হাজার পর্যন্ত বন্দি থাকলে সেটিকে স্বাভাবিক বন্দির ধারণক্ষমতা হিসেবে মনে করে কারা কর্তৃপক্ষ। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তখন থেকেই তিনি চম্পাকলিতে আছেন। বিশেষ সেই সেলের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে অবস্থান করছেন তিনি। তাঁকে সব ধরনের ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

এর বাইরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকেও রাখা হয়েছে চম্পাকলির নিচতলায়। তবে চতুর্থ তলায় রাখা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে। ১০ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে রাখা হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর ডিভিশন সেলে।

সম্পর্কিত খবর

সারিয়াকান্দিতে কৃষকের চারা উৎপাদন

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version