আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:০৪ এএম | অনলাইন সংস্করণ ছেঁড়া পোশাক পরেছিলেন
সঞ্জয় দত্তের আইনজীবী প্রদীপ রাই প্রকাশ করেছেন যে অভিনেতা কয়েক বছর কারাগারে কাটানোর পরে নিজের সম্পর্কে অনেক কিছু পরিবর্তন করেছেন। অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত প্রায় নয় বছর কারাগারে ছিলেন 1993 সালের মুম্বাই বিস্ফোরণের সময় বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে টাডা আদালতের সাজা অনুসারে। পাঁচ বছর জেলে থাকার সময়, অভিনেতা তার ব্যক্তিত্ব এবং জীবনে অনেক পরিবর্তন করেছিলেন। অভিনেতার আইনজীবী প্রদীপ রাই অভিনেতার নন-গ্ল্যামারাস যাত্রা এবং কীভাবে এটি তাকে প্রভাবিত করেছিল তা প্রকাশ করেছেন। আইনজীবী আরও বলেন যে সঞ্জয় একবার পরার পর কাপড় ফেলে দিতেন কিন্তু জেলে যাওয়ার পর সব বদলে যায়।
Lallantop-এর সাথে একটি সাক্ষাত্কারে, প্রদীপ বলেছিলেন যে সঞ্জয় তার কারাবাসকে ইতিবাচক উপায়ে নিয়েছিলেন। তিনি হিন্দিতে কথা বলেছিলেন এবং বলেছিলেন, “সঞ্জয় দত্ত বদলে গেছে। আমার সাথে দেখা হলে বলতেন, ‘স্যার আপনি আমাকে আগে দেখেননি’। তিনি আরও বলতেন যে এখন পরিস্থিতি বদলেছে এবং তার মেয়েও বড় হয়েছে। একজন মানুষের জীবনে অনেক উত্থান-পতন আছে কিন্তু একটি বা দুটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রয়েছে যা সে মাদকের কারণে মিস করেছে এবং এই ক্ষেত্রে। কিন্তু তারপরও তিনি ধৈর্য হারাননি।
যেদিন সে জেলে যাচ্ছিল, আমি মুম্বাই যেতে পারিনি এবং সে আমাকে ফোন করে বলেছিল যে সে ভিতরে যাচ্ছে।” চার দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার
সঞ্জয় দত্তের জীবন কোনো থ্রিলার মুভির চেয়ে কম নয়। বলিউডের অন্যতম ‘টাফ ম্যান’ ৬৪ বছর বয়সেও অভিনয় করে চলেছেন তরুণদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। তার বিতর্কিত সন্ত্রাসী জীবন, মাদক গ্রহণ ও জেল খাটা অনেকটাই বদলে দিয়েছিল তাকে। কতটা বদলে ছিলেন সঞ্জু বাবা? ১৯৮১ সালে ‘রকি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিষেক। এরপর ১৮০-এর বেশি হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সঞ্জয় দত্ত। অনেক ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন এই সুপারস্টার। তবে গ্যাংস্টার আর পুলিশ অফিসার চরিত্রেই তাকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন দর্শকরা। আর এসব চরিত্রে অভিনয়ের জন্য চলচ্চিত্র দর্শকরা তাকে ‘ডেডলি দত্ত’ নামে ডাকেন। অসংখ্য সুপারহিট ছবির অভিনেতার ঝুলিতে আছে অনেক পুরস্কার। বলিউডের অন্যতম সুদর্শন জুটি সুনীল দত্ত-নার্গিসের সন্তান তিনি। ছোটবেলা থেকেই ধোপদুরস্ত, ফ্যাশনসচেতন।
কথিত আছে একবার ব্যবহৃত জামাকাপড়, জুতো, বেল্ট-হাতঘড়ি আর দ্বিতীয়বার পরতেন না তিনি। ক্ষেপাটে এই সুদর্শন যুবক কোনো পোশাক গায়ে তুলতেন না ব্র্যান্ড ছাড়া। নামিদামি ব্র্যান্ড আর নিত্যনতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরিই ছিল তার কাজ। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটেন সঞ্জয়। সে সময় একেবারে বদলে যান তিনি। সেই ‘এক কাপড় দ্বিতীয়বার না পরা’ মানুষটা কীভাবে বদলে গেলেন সে গল্পই শোনালেন তার আইনজীবী। সঞ্জয় দত্তের আইনজীবী প্রদীপ রায়। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অভিনেতা জেলে ‘জীর্ণ ও ছেঁড়া’ পোশাক পরতেন। একেবারে বদলে গিয়েছিলেন তিনি। এক কাপড় দ্বিতীয়বার না পরার অভ্যাস যেন ভুলেই গিয়েছিলেন তিনি।
প্রদীপ দাবি করেন, অভিনেতা জেলে থাকার পর একজন পরিবর্তিত মানুষ হয়ে ওঠেন
তিনি তাকে জেলে একই জীর্ণ ও ছেঁড়া পোশাক বারবার পরতে দেখেছেন। জীবনের নানা উত্থান-পতন খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করা সঞ্জয় জেলে থেকে তার ব্যক্তিত্ব ও জীবনে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। হিন্দি ভাষার ওয়েব লালনটপের সঙ্গে কথোপকথনে প্রদীপ রায় বলেন, সঞ্জয় দত্ত বদলে গিয়েছিলেন। যখন তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতেন, বলতেন, ‘আপনি আমাকে আগে দেখেননি’। তিনি আরও বলতেন, এখন পরিস্থিতি বদলেছে, মেয়েও বড় হয়েছে। মাদক গ্রহণের কারণে তিনি জীবনের অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলেও প্রদীপকে জানান অভিনেতা।
প্রদীপ বলেন, তবে ধৈর্য হারাননি অভিনেতা। যে সঞ্জয় দত্ত এক কাপড় একবার পরেই ফেলে দিতেন কারাগারে থাকার পর তা বদলে যায়। সেই সঞ্জয় দত্ত যখন জেল থেকে বেরিয়েছিলেন, একটি পোশাকই নিয়ে এসেছিলেন, যা খুব জীর্ণ ও ছেঁড়া ছিল। তাতে ছিল ২৫-৩০টি গর্ত। তিনি আমাকে সেই পোশাকটি দেখিয়ে বলেছিলেন তিনি শুধু সেটিই পরেছিলেন। সম্প্রতি সঞ্জয় দত্তকে দেখা গেল তামিল অ্যাকশন থ্রিলার ছবি ‘লিও’তে। থালাপাতি বিজয় অভিনীত ছবিতে অ্যান্টনি দাসের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। এ বছরের সেপ্টেম্বরে মুক্তি পাওয়া শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’ ছবিতেও তিনি ক্যামিও ছিলেন। সামনে তাকে তেলেগু ছবি ‘ডাবল স্মার্ট’, পাঞ্জাবি ফিল্ম ‘শেরান দ্য কাউম পাঞ্জাবি’ এবং কন্নড় ছবি ‘কেডি দ্য ডেভিল’-এ দেখা যাবে।