আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:১২ এএম |  অনলাইন সংস্করণ নাটোরের ঐতিহ্যবাহী কাঁচাগোল্লা

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল নাটোরের ঐতিহ্যবাহী কাঁচাগোল্লা


দেশের ১৭তম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে নাটোরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন কাঁচাগোল্লা। বৃহস্পতিবার পেটেন্ট, শিল্প নকশা ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর- শিল্প মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের সাক্ষরিত ভৌগোলিক নির্দেশক নিবন্ধন সনদে নাটোরের কাঁচাগোল্লার নাম অন্তর্ভুক্তি করনের সনদ হাতে পাওয়া গেছে। নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে নাটোরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। ঐতিহ্যবাহী এই কাঁচাগোল্লা দীর্ঘদিন ধরে বিকৃত আকারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়ে আসছিলো। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের প্রসিদ্ধ একটি খাদ্যপণ্য প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান নাটোরে তাদের ব্রান্ড শপে গোলাকার কাঁচাগোল্লা বিক্রি শুরুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

clipping path tech

এরপর থেকে নাটোরের সুধীমহল এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করে। তার পরেই ঐতিহ্যবাহী নাটোরের কাঁচাগোল্লাকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাটোরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

এ বছরের ৩০ মার্চে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বরাবর নাটোরের কাঁচাগোল্লাকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন পাঠায় জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা বলেন, এটা আমাদের জন্য গৌরবের কাঁচা গোল্লার সাথে নাটোরের মানুষের আবেগ ও ঐতিহ্য জড়িত। তাই এটাকে সংরক্ষণ ও প্রসারের জন্য সবসময় কাজ করে যাবো।  জি

আই নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণকারী নাটোরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদকে নিয়েও আজ নাটোরের মানুষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে

কথিত আছে, কাঁচাগোল্লা সৃষ্টির পেছনে আছে মজাদার ইতিহাস। অর্ধ বঙ্গেশ্বরী খ্যাত নাটোরের রানি ভবানীর প্রিয় খাদ্যের তালিকায় ছিল মিষ্টি। তার রাজপ্রাসাদে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন শহরের লালবাজারের মিষ্টি বিক্রেতা মধুসূদন পাল। একদিন মধুসুদন পালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব কর্মচারী অনুপস্থিত থাকেন।

metafore online

মিষ্টি তৈরির জন্যে সংগ্রহ করা দুই মণ ছানা নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মধুসূদন ছানার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে উনুনে তাপ দেন। কারিগর ছাড়াই এলোমেলো এই আয়োজনে তৈরি হয় নতুন এক মিষ্টি। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় নতুন এই মিষ্টিই পাঠিয়ে দেন রানি ভবানীর রাজবাড়িতে। রানি ভবানী এই মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করেন এবং এর নাম জানতে চান।

মধুসূদন পাল তখন কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা। এই গল্প বেঁচে আছে শত-শত বছর ধরে মানুষের মুখে-মুখে। তবে নাম গোল্লা হলেও এটি দেখতে গোল নয়। কাঁচাগোল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নাটোরবাসীর আবেগ ও ভালোবাসা। তাই ২৫০ বছর আগে কাঁচাগোল্লা আবিষ্কৃত হয়ে আজও সুনাম বজায় রেখেছে। নাটোরের বিয়ে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও অতিথি আপ্যায়নে সরবরাহ করা হয় কাঁচাগোল্লা। শুধু দেশে নয়, সারাবিশ্বেই এখন নাটোরের কাঁচাগোল্লা প্রসিদ্ধ।

সম্পর্কিত খবর

টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version