আপডেট :০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৩ পিএম |  অনলাইন সংস্করণ

বেশি দামে বাংলাদেশি পোশাক কিনবে বিদেশি ক্রেতারা

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ক্রয়মূল্য বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এইচঅ্যান্ডএম ও গ্যাপের মতো আন্তর্জাতিক ফ্যাশন রিটেইলার। হাজারের বেশি পোশাক ক্রেতাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সং গঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বখ্যাত সুইডিশ ফ্যাশন রিটেইলার ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম, গ্যাপসহ অন্য খুচরা বিক্রেতারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ক্রয়মূল্য বড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বাংলাদেশি পোশাক কিনবে বিদেশি ক্রেতারা

শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর ফলে পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে কারখানাগুলোর যে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, সেটা পূরণে এই বাড়তি মূল্য সহায়তা করবে। বিশ্বে চীনের পর সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক হচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে পুলিশের সাথে পোশাক কর্মীদের বিক্ষোভ-সহিংসতার পর বাংলাদেশের সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা (১১৩ মার্কিন ডলার) করেছে। পোশাক শ্রমিকদের নতুন এই মজুরি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম কারখানা মালিকরা বলেছেন, আগামী জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করায় তাদের মুনাফা হ্রাসের পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয়ও ৫ থেকে ৬ শতাংশ বাড়বে। তৈরি পোশাকের মোট উৎপাদন খরচের ১০ থেকে ১৩ শতাংশ শ্রমিকদের পেছনে ব্যয় হয় বলে এই খাতের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে।

metafore online

এএএফএ-এর প্রধান নির্বাহী স্টিফেন লামারের কাছে জানতে চাওয়া হয়- উৎপাদন ব্যয় ৫ থেকে ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে ক্রয়মূল্য একই পরিমাণে বাড়াবেন কিনা?

জবাবে রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই।’ স্টিফেন লামার বলেন, ‘আমরা ও আমাদের সদস্যরা বেশ কয়েকবার বলেছি, মজুরি বৃদ্ধিকে সমর্থন জানানোর জন্য আমরা দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বার্ষিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা পদ্ধতি গ্রহণের জন্য আমরা বারবার আহ্বান জানিয়েছি, যাতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে সুবিধাবঞ্চিত না হন।’ সস্তা শ্রমই বাংলাদেশে পোশাকশিল্প গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে। এই শিল্পে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তিও তৈরি পোশাক খাত। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১৬ শতাংশ আসে এই খাত থেকে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, বাড়ানোর পরও বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি আঞ্চলিক তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশের তুলনায় কম থাকবে। বাংলাদেশের কিছু শ্রমিক বর্ধিত মজুরিকে একেবারে কম বলেছেন। ভিয়েতনামে একজন শ্রমিক মাসে গড়ে ২৭৫ মার্কিন ডলার এবং কম্বোডিয়ায় ২৭৫ মার্কিন ডলার পান, যা বাংলাদেশের বাড়ানো মজুরির (১১৩ ডলার) তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা পোশাক বিক্রেতা অ্যাবারক্রম্বি অ্যান্ড ফিচ ও লুলুলিমনসহ এএএফএ-এর বেশকিছু সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ করেছিল।

আর এ বিষয়ে পোশাক ক্রেতাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক সংগঠন এএএফএ-এর প্রধান নির্বাহী লামারও জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছিলেন বলে জানায় রয়টার্স। যে পরিমাণ মজুরি বাড়ানো হয়েছে তা নিয়েই পোশাক শ্রমিকদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তিনি এই কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পোশাক শ্রমিকদের জন্য যে মজুরি বাড়ানো হয়েছে, তা নিয়েই তাদের কাজ করতে হবে

clipping path tech

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি দফায় দফায় বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। এবার ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। শতকরা ৫৬ ভাগ বাড়ানো হয়েছে। আন্দোলনের নামে ১৯টি কারখানা ধ্বংস করা হয়েছে। যারা তাদের (শ্রমিক) উসকানি দিচ্ছে, তারাই তাদের ধ্বংস করবে।এটা শ্রমিকদের বুঝতে হবে।

যখনই সময় আসে তাদের সব রকম সুবিধা আমরা করে দিই’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যদি সেটা না করে, কারো প্ররোচনায় রাস্তায় নামে, তখন যারা তাদের উসকানি দিচ্ছে তারাই তাদের (শ্রমিকদের) লাশ ফেলবে। এরা এমন অবস্থা সৃষ্টি করবে যে, তারা (শ্রমিকরা) চাকরি হারাবে, কাজ হারাবে, গ্রামে যেয়ে পড়ে থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক অধিকারে বিশ্বাস করি। জনগণের ভোটের মাধ্যমেই বারবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছে।’ ৭৫-এর পর অস্ত্রের জোরে যেসব সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তারা সন্ত্রাস এবং লুটপাট ছাড়া জনগণকে কিছুই দিতে পারেনি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্পর্কিত খবর:

জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পেল ওয়ালটন

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version