বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচনের পথ শুধু এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, এতে বিদ্যমান রাজনৈতিক সঙ্কট শুধু দীর্ঘায়িত হবে, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্যও চ্যালেঞ্জিং হবে। ‘বাংলাদেশজ ইলেকশন্স: এ নেক্সাস অব ডমেস্টিক আনরেস্ট অ্যান্ড গ্লোবাল ডিপ্লোম্যাসি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা লিখেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক অনলাইন দ্য রিও টাইমস।

metafore online

এতে রোকো ক্যালডেরো লিখেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন মৌসুম অশান্ত। এতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক ধরন বিপরীতমুখী। উভয় দেশই একটি স্থিতিশীল এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সমর্থন করে। কিন্তু তাদের পদ্ধতির মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সুষ্ঠু নির্বাচনে জোর দিয়েছে। যারা গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পক্ষান্তরে নির্বাচনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করে ভারত। তারা এখানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন দিয়েছে।

clipping path tech

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নির্বাচনে কারসাজির অভিযোগের মধ্যে তিনি চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত হতে চান।

তবে কারসাজির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। অন্যদিকে এই নির্বাচন বর্জন করছে বিরোধী জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সহ আরও কিছু দল। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করছে। বিএনপির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপড়েনের ইতিহাস আছে। অভিযোগ আছে, ভারতবিরোধী বিদ্রোহীদের আশ্রয়প্রশ্রয় দিয়েছে বিএনপি। ফলে শেখ হাসিনার প্রতি তাদের সমর্থন প্রভাবিত হয়েছে।

তিনি আরও লিখেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দৃঢ়।

তারা এখানে গণতান্ত্রিক অখণ্ডতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই অবস্থা ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানের বিপরীত, আঞ্চলিক অগ্রাধিকারের সঙ্গে এতে মতবিরোধ প্রতিফলিত। বাংলাদেশের পশ্চাৎগামী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যবহার করছে বিএনপি।

দেশ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে: অলি আহমদ BD News

বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহকারী এবং বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। এতে জটিলতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত হওয়ার সমালোচনা করেছে চীন। তারা সমর্থন করে শেখ হাসিনার সরকারকে। এতে ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশের কৌশলগত মূল্য প্রতিফলিত হয়।

ওদিকে দেশে পুলিশ, আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সহিংস সংঘর্ষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে সরকার দমনপীড়নকে কৌশল হিসেবে নিয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির হাজার হাজার সদস্য গ্রেপ্তারির মুখে আছেন। এই টলমলে পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক সঙ্কটকে জোরালো করে তুলেছে।

এমন অবস্থায় নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পশ্চিমা দেশগুলো আন্তর্জাতিকভাবে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। এই সমর্থনকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। একে ব্যবহার করে তাদের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তকে বৈধতা দিচ্ছে। বর্তমান সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে ভারত ও চীন। তারা নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর জোর দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতির সংঘাতময় প্রকৃতি তীব্র হয়ে উঠেছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলো কৌশলগতভাবে সহিংসতা ব্যবহার করছে। এই পরিস্থিতি রাজপথে সহিংসতা এবং পুলিশের প্রতিশোধপরায়ণতা দীর্ঘায়িত করে। আসন্ন নির্বাচনে গভীর রাজনৈতিক বিভাজনকে সংশোধন করার কোনো লক্ষণ নেই। এ অবস্থায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনিশ্চয়তায় ভরা। রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য ‘জিরো-সাম’ থেকে অধিক গঠনমূলক রাজনীতিতে পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সম্পর্কিত খবর:

বগুড়ায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় অটোভ্যান যাত্রী নিহত

News Bangla,Bd News Bangla

Bd News Bangla,Bd News Bangla 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version