আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৫৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধাক্কা
শ্রমিকদের উদ্ধারে আমেরিকা থেকে একটি ড্রিলিং মেশিন আনা হয়। সেটি দিয়ে ধ্বংসস্তূপে ৬০ মিটার লম্বা একটি পাইপ বসানোর কাজ চলছিল। কিন্তু শ্রক্রবার ড্রিলিং মেশিনটি লোহার বস্তুতে আঘাত হেনে ভেঙে যায়। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রোববার (২৬ নভেম্বর) থেকে হাত দিয়ে ড্রিলিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। আর হাত দিয়ে ড্রিলিং করার কাজটি করার জন্যই সেনাবাহিনীকে ডাকা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হাত দিয়ে ড্রিলিংয়ে অংশ নেবেন সেনাবাহিনীর একাধিক সদস্য।
একজন ড্রিলিং করা শেষে অপর একজন আবদ্ধ স্থানে ঢুকবেন।
এবারে পর্যায়ক্রমে প্রায় ১৫ মিটার অংশ ড্রিল করা হবে। এই কাজে অংশ নিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মাদ্রাস স্যাপার্স ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে। মাদ্রাস স্যাপার্স সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পসের একটি দল। ১৫ দিন ধরে টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের আরও কয়েকদিন এমনকি একের অধিক সপ্তাহও অপেক্ষা করতে হতে পারে।
তবে ভালো খবর হলো শ্রমিকরা সুস্থ আছেন। একটি সরু পাইপের মাধ্যমে তাদের অক্সিজেন, খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রি পাঠানো হচ্ছে।
ভারতের জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ আতা হাসনাইন সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন হতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। যখন আপনি পাহাড়ে কাজ করেন, আগে থেকে কোনো কিছু আন্দাজ করা যায় না।
আমরা কখনো অভিযান শেষ করার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা দেইনি। যারা হাত দিয়ে ড্রিলিংয়ের কাজটি করবেন তাদের নিরাপত্তার জন্য একটি সুরক্ষা ছাতা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স। এছাড়া অক্সিজেন সুবিধাসম্বলিত ৪১ বেডের একটি হাসপাতালও প্রস্তুত করা হয়েছে।
ভারতের উত্তরাখণ্ডে নির্মাণাধীন টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযান শেষ মুহূর্তে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে।
ফলে এখন আটকে পড়াদের উদ্ধারে নতুন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞাপন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি শনিবার (২৫ নভেম্বর) জানিয়েছে, শ্রমিকদের উদ্ধারে আমেরিকান অগার ড্রিলিং মেশিন দিয়ে ড্রিল করে টানেলের ধ্বংসস্তূপের ভেতর ৬০ মিটার লম্বা পাইপ বসানোর কাজ চলছিল।
কিন্তু গতকাল শুক্রবার রাতে ড্রিলিং মেশিনটি একটি লোহায় আঘাত হানে। এতে মেশিনটি ভেঙে যায়। এরপর সেখানে উদ্ধার অভিযানও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ড্রিল মেশিন দিয়ে ড্রিল করার বদলে হাত দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলবে। বিজ্ঞাপন এ ব্যাপারে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুসকার সিং ধামি আজ বলেছেন, কাল রোববার থেকে হাত দিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার কাছ থেকে নিয়মিত এ ব্যাপারে আপডেট রাখছেন এবং তারা আশা করছেন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান শেষ হবে।
আমেরিকান যে ড্রিলিং মেশিনটি দিয়ে কাজ করা হচ্ছিল, সেটি ভেঙে গিয়ে ভেতরে আটকে গেছে। এখন এই ড্রিলিং মেশিনটি কেটে বের করতে হায়দ্রাবাদ থেকে আরেকটি বিশেষ মেশিন আনা হচ্ছে। শুক্রবার উদ্ধারকারীরা জানিয়েছিলেন,
তারা শ্রমিকদের কাছ থেকে আর মাত্র ১০-১২ মিটার দূরে রয়েছেন। তারা বলেছিলেন, শুক্রবার রাতের মধ্যে শ্রমিকদের বের করে আনা সম্ভব হবে। কিন্তু সেটি হয়নি। গত ১২ নভেম্বর কাজ শেষে শ্রমিকরা যখন টানেল থেকে বের হচ্ছিলেন, তখন টানেলটির একটি অংশ ধসে পড়ে। এতে ভেতরে ৪১ জন আটকা পড়ে যান।
১৩ দিন ধরে উদ্ধার অভিযান চললেও এখনো এটি আলোর মুখ দেখেনি। তবে সবার জন্য ভালো খবর এটি যে, আটকা পড়া শ্রমিকরা সবাই বেঁচে আছেন এবং ৬ ইঞ্চি সরু একটি পাইপ দিয়ে তাদের খাবার, অক্সিজেনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে।
সূত্র: এনডিটিভি