আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৩,  এএম  |  অনলাইন সংস্কর গাজায় যুদ্ধবিরতির 

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস

গাজায় যুদ্ধবিরতির

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাস। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সাধারণ পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবটি তোলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডান।প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় পরিষদের ১২০ সদস্য। বিপক্ষে ভোট দেয় ১৪ সদস্য। অন্যদিকে, ৪৫ সদস্য ভোটদানে বিরত ছিলো

সাধারণ পরিষদে তোলা প্রস্তাবে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস ও নির্বিচার হামলাসহ’ সব সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দাও জানানো হয়। একইসঙ্গে বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষা ও বাধাহীন ত্রাণসহায়তার আহ্বান জানানো হয়।প্রস্তাবে চলমান সংঘাতের সময় জিম্মি বেসামরিক ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাঁদের নিরাপত্তা, সুস্থতা ও তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার আহ্বানও জানানো হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হওয়ার পর তা মেনে চলার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। তবে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এই পরিষদের সদস্য হওয়ায় পাস হওয়া প্রস্তাবগুলোর নৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

এরপর থেকে গাজায় অব্যাহত বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। একই সঙ্গে উপত্যকাটি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ, পানি, খাবার, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে চরম মানবিক সংকটে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য ত্রাণসহায়তা পাচ্ছেন তারা। গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশই নারী ও শিশু।

একই সময়ে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অভিযানে ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। সূত্র: আল জাজিরা।এছাড়া অধিকৃত পশ্চিমতীরের হেবরনে বুধবার ভোরে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলে। এসময় অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা আল-বুর্জ ও আল-মাজদসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়েছে।

metafore online

গত ৭ অক্টোবর থেকে হেবরন থেকে ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে ইসরায়েল গ্রেপ্তার করেছে এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুসারে, গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বিমানের নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অবরুদ্ধ অঞ্চলটির বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। নিহত ৫ হাজার ৭৯১ জনের মধ্যে শিশুর সংখ্যা হলো ২ হাজার ৩৬০ জন। অর্থাৎ ইসরায়েলের হামলায় যেসব ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু।

গাজায় যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি ভোট পাস হয়েছে।

মঙ্গলবারের প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৫৩টি দেশ। যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ ১০টি দেশ ভোট দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি জানিয়েছে। অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে গত শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটি ব্যর্থ হওয়ার পর মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সাধারণ পরিষদের ভোটে পক্ষে ভোট দিয়েছে দেড় শতাধিক দেশ।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ ১০টি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আর ২৩ দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। যদিও সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া এই রেজোলিউশনটি মানা বাধ্যতামূলক নয়, তারপরও এটি সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটির পর সৌদি আরবের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত আবদুল আজিজ আলওয়াসিল এক মন্তব্যে বলেছেন, আমরা তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই যারা এই খসড়া প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেছেন যা সবেমাত্র বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ দ্বারা গৃহীত হয়েছে। গাজায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

এ হামলায় ১৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ।এর আগে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে ১৩ সদস্য দেশ যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল, যুক্তরাজ্য ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। প্রস্তাবটি উত্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপরই সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটির পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

এবারের প্রস্তাবে গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি দু’টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছিল আমিরাত। প্রথমত, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সব বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দ্বিতীয়ত, অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে সব বন্দিকে মুক্ত করা।

সম্পর্কিত খবর

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস

শেষ হলো ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’র শুটিং

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version