আপডেট :০৪ মার্চ ২০২১, ১১:২৯ এএম | অনলাইন সংস্করণ রহস্যজনক মৃত্যু
রহস্যজনক মৃত্যু
টালিউডের জনপ্রিয় নায়ক অঙ্কুশ হাজরার ব্যাক্তিগত সহকারী পিন্টু দের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে নিজ বাড়ি থেকে। পিন্টু অঙ্কুশের প্রেমিকা অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেনেরও সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। টালিউড অভিনেতা-অভিনেত্রীর সহকারীর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছেন। এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন সে কথা। খবর জিনিউজের। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার কাঁকুড়গাছির বাড়ি থেকে পিন্টুর লাশ উদ্ধার করা হয়। বুধবার সকালে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের ধারণা, পিন্টু আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবারের অভিযোগ, প্রায়ই ফোনে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হতো পিন্টুকে।
এ ঘটনার সঙ্গে হুমকিদাতাদের কোনো যোগাযোগ রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পরে নীলরতন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়। বুধবার সকালে পিন্টুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ভার্চুয়াল মাধ্যমে ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়ে মানসিক চাপে ভুগছিলেন পিন্টু। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এ তথ্য জানতে পেরেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।পুলিশ জানায়, পিন্টুর মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তা থেকে এই মৃত্যুরহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। টালিউডে পিন্টুর পরিচিতি ছিল অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী ‘বাপ্পা দা’ হিসেবে। তার মৃত্যুর খবর শুনে বুধবার পিন্টুর বাড়িতে যান তারা। পরিবারের অভিযোগ, নিয়মিত টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হত পিন্টুকে। পুলিশ জানিয়েছে, গত দেড় মাসে ভাগে ভাগে মোট ৩০ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে অজ্ঞাত কাউকে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, এর জেরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন পিন্টু।
অঙ্কুশ আনন্দবাজারকে জানান, ঘুণাক্ষরেও তিনি সে সব কিছু টের পাননি। পিন্টুর ফোনে কেন হুমকি দেওয়া হতে সে বিষয়ে এখনও কিছুই জানা যায়নি বলে দাবি করেন অঙ্কুশ। অঙ্কুশ আরও জানান, তার কাছ থেকেও কয়েক বার টাকা নিয়েছিলেন পিন্টু। অভিনেতার দাবি, ধার শোধ করতে হবে বলেই সে টাকা চেয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত সহায়ক। পিন্টুর মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান অঙ্কুশ বলেন, ‘খুবই সৎ মানুষ ছিলেন বাপ্পাদা। তাই যখনই টাকা চেয়েছেন, দিয়ে দিয়েছি। জানতাম, খারাপ কাজ করতেই পারেন না। টাকা চাওয়ার আসল কারণ বুঝতে পারলে এ ভাবে অসময়ে চলে যেতে দিতাম না।’ অঙ্কুশের প্রেমিকা ঐন্দ্রিলা মনে করছেন পিন্টু আত্মহত্যা করেছেন। তার ভাষ্য, ‘কী করে এমন কাজ করল বাপ্পাদা? নিজের মা আর বোনকে ফেলে চলে যেতে পারল!’
বেরিয়ে এলো কলকাতার তারকা জুটি অঙ্কুশ হাজরা ও ঐন্দ্রিলার সহকারী পিন্টু দে ওরফে বাপ্পার আত্মহত্যার রহস্য।
জানা গেছে, একটি ভিডিও দেখিয়ে দিনের পর দিন তিনি ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছিলেন। এরপর এক পুলিশ কর্মকর্তার ছবি পাঠিয়ে তার নাম করেই দেওয়া হয় হুমকি। তা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বাপ্পা। এই ঘটনার পর অঙ্কুশ সামাজিকমাধ্যমে জানান, কাছের মানুষকে হারিয়ে তারা শোকাহত। পুলিশ বলছে, এই ঘটনার পেছনে রাজস্থানের ভরতপুরের একটি গ্যাংয়ের যোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে বিষয়টি কিছুদিন আগে থানায় জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। পূর্ব কলকাতার নারকেলডাঙা নর্থ রোডের একটি বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাটে থাকতেন বাপ্পা। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তার সাড়াশব্দ না পাওয়ায় পরিবারের লোকেরা বাথরুমের দরজা ভাঙেন। সিলিং থেকে উদ্ধার করা হয় ঝুলন্ত মরদেহ। পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বাপ্পার এক আত্মীয় জানান, তার মোবাইলে হোয়াটস অ্যাপে দুটি নম্বরে চ্যাট দেখেই মৃত্যুরহস্যের মোড় ঘোরে। চ্যাটগুলোতে তাকে ব্ল্যাকমেল করে বলা হয়েছে, ভিডিও আপলোড করে দেওয়া হবে। বাপ্পা বারবার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে ভিডিওটি মুছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
বলেছেন, তিনি অত্যন্ত গরিব। বলা হচ্ছে, ভিডিও আপলোড করার ভয় দেখিয়ে অন্তত এক মাস ধরে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছে।
কখনো দুই, কখনো তিন হাজার টাকা চাওয়া হয়। ক্রমে দুই দফায় তিনি ৫ হাজার টাকা ও এক দফায় দশ হাজার টাকা ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে জালিয়াতদের পাঠান। এমনকি অঙ্কুশের কাছ থেকে টাকা নিয়েও জালিয়াতদের দেন বলে দাবি পরিবারের। এরপরও তার কাছ থেকে দশ হাজার টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু ওই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা বাপ্পার ছিল না। তখন জালিয়াত হোয়াটস অ্যাপে এক পুলিশ কর্মকর্তার একটি ভুয়া পরিচয়পত্র পাঠায়। হুমকি দিয়ে জানায়, দুই মিনিটের মধ্যে টাকা না দিলে দুই ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হবে। পরিবারের দাবি, বাপ্পা এই চাপ নিতে পারেননি বলেই আত্মহত্যা করেন।