আপডেট :সোমবার ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩ ০৮:০৯ অপরাহ্ন |  অনলাইন সংস্করণ    অভিযোগে

আজ তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সভা

অভিযোগে

গ্রেপ্তার অপর ২ অপহরণকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি সদস্যসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দুই সদস্যসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-সিআইডির উপপরিদর্শক রেজাউল করিম, কনস্টেবল আবু সাইদ ও মো. শরীফ হোসেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ আজ সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে একজনকে অপহরণ, ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়, ব্ল্যাঙ্কচেক নেওয়া ও হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিবি প্রধান জানান, এ ঘটনায় গত ৩ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার অপর ২ অপহরণকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডি সদস্যসহ ৩ জনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

metafore online

মামলার বাদী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ৭ অক্টোবর বিকেলে অপহরণকারীদের একজন তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করে তার ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চায়।

পরে ওই রাতে, অন্য একটি নম্বর থেকে কল করে সিআইডির ‘ওসি রবিউল’ পরিচয় দিয়ে পরদিন দুপুরের মধ্যে মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে যেতে বলে।মামলার এজাহারে বলা হয়, পরদিন সকালে সিআইডির পোশাক ও হেলমেট পরা ৪ জন মোস্তাফিজুরের বাসায় গিয়ে দরজায় নক করে। দরজা খুলে দিলে তারা মোস্তাফিজুরকে বাসার নিচে নিয়ে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে পূর্বাচলের একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়।

সেখানে তারা টাকা চেয়ে তাকে মারধর করে।ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে সোয়া পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ে গ্রেপ্তার পাঁচজন। তাঁরা হলেন বাঁ থেকে সিআইডির এসআই রেজাউল করিম, কনস্টেবল আবু সাঈদ, মো. ইমন সরদার, আব্দুল্লাহ আল ফাহিম ও মো. শরীফ হোসেন ছবি: সংগৃহীত এজাহারে আরও বলা হয়, তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হত্যার হুমকি দিয়ে মোস্তাফিজুরের এটিএম কার্ড নিয়ে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা তোলে এবং তার কাছ থেকে দুটি ব্ল্যাঙ্ক চেক নেয়।পরে তারা মোস্তাফিজুরকে বাসার কাছে দিয়ে আসে এবং ৩০০ টাকার সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে সই নিয়ে রাখে। অপহরণকারীরা পরে আবার তাকে ফোন করে এ ঘটনা কাউকে বললে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। যোগাযোগ করা হলে মোস্তাফিজুর ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তারা ভুয়া সিআইডি। কিন্তু এখন এটা পরিষ্কার যে, সিআইডির সদস্য এই অপরাধে জড়িত। তিনি বলেন, ‘তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আশা করি ন্যায়বিচার পাব।’অপহরণ ও মারধর করে টাকা আদায়ের অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃত উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ও কনস্টেবল সাঈদ বাহিনীটির অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) কর্মরত রয়েছেন বলে জানিয়েছে ডিবি।

আজ সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান। ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাজ হলো তদন্ত করা। যখন থানায় কোনো মামলা হয় তখন সেই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করা বা ছায়াতদন্ত করা হয়। ভাটারা থানায় চলতি বছরে এক ট্রাভেল ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী হিসেবে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, সিআইডি পরিচয় দিয়ে ফোন করে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় শেষে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে যাওয়া হতো। এসব অভিযোগে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) তদন্তে নামে। তিনি বলেন, তদন্তের এক পর্যায়ে বরিশাল থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে অপহরণ ও টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেন। এ সময়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, চক্রে একজন পরিদর্শক ও আরেকজন এসআই পদের দুই পুলিশ সদস্যও জড়িত। যদিও এ পরিচয় সঠিক নয়। যিনি নিজেকে পরিদর্শক রবিউল পরিচয় দিয়েছেন তিনি আসলে একজন কনস্টেবল। তারা নিজেদের ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় করতেন। সিআইডিতে কর্মরত দুই পুলিশ সদস্যের সঙ্গে অপহরণ চক্রের সদস্যরাও জড়িত। হারুন অর রশীদ বলেন, দুজনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর অপহরণ ও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, ফোনের লিস্ট ও লোকেশন ট্রাকিং করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার চক্রের অপর তিন সদস্য হলেন আবদুল্লাহ আল ফাহিম (২১), মো. শরীফ হোসেন (২৬) ও মো. ইমন সরদার (২১)।

তাঁদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল ফাহিম ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুরের বন্ধু, শরীফ এসআই রেজাউলের ব্যক্তিগত গাড়িচালক। আর ইমন একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করেন। মোস্তাফিজুর রহমানকে অপহরণ করে টাকায় নেওয়ার কথা স্বীকার করে ইমন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এই ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, সিআইডির এসআই রেজাউল করিম (৩৯) ও কনস্টেবল আবু সাঈদ (৩২) এই অপহরণকারী চক্রের নেতৃত্ব দিতেন। তাঁরা সিআইডি পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ডেকে অপহরণ করে পূর্বাচলের নির্জন এলাকায় নিয়ে যেতেন।

clipping path tech

সেখানে আটকে নির্যাতন করে অপহরণের শিকার ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করতেন। এই বিষয়ে সিআইডির মুখপাত্র পুলিশ সুপার আজাদ রহমান গণমাধ্যমে বলেন, অপরাধে জড়িত এই দুই সিআইডি সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার বাদী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তিনি ‘বায়িং হাউসের’ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বাবার চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি জমি বিক্রি করে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন। তার এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে এই টাকার খবর পান সিআইডির দুই সদস্য।

এর কয়েক দিন পর ৭ অক্টোবর এসআই রেজাউল ওসি পরিচয় দিয়ে তাকে ফোন করেন। মোস্তাফিজুর বলেন, আমি সিআইডি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা না করায় তাঁরা গত ৮ অক্টোবর আমার ভাটারার বাসায় এসে জোর করে আমাকে তুলে নেন

পরে পূর্বাচলের নির্জন এলাকায় আটকে প্রায় আট ঘণ্টা রেখে নির্যাতন করেন। ২০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে হত্যার হুমকি দেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে বলি, আমার অ্যাকাউন্টে ছয় লাখ টাকা আছে। পরদিন নিকুঞ্জ এলাকার একটি ব্যাংক থেকে আমাকে দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা তুলে নেন রেজাউল ও তাঁর সহযোগীরা। ’ তিনি বলেন, টাকা নেওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আগে দুটি খালি চেক নেন তাঁরা।

সম্পর্কিত খবর:

নৌকার জন্য রক্ত দিয়েছি, নৌকার আসল মালিক আমরা নিক্সন

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version