আপডেট :২১ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৫ পিএম |  অনলাইন সংস্করণ  দেশের রেমিট্যান্সের চাকা

ঘুরতে শুরু করেছে দেশের রেমিট্যান্সের চাকা

প্রণোদনা দ্বিগুণ হওয়ায় ঘুরতে শুরু করেছে রেমিট্যান্সের চাকা। গত অক্টোবরের পর চলতি মাসেও প্রবাসী আয়ে সুবাতাস লেগেছে। নভেম্বরে প্রথম ১৭ দিনেই দেশে এসেছে ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে গড়ে দৈনিক প্রায় ৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।  আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে জানানো হয়, চলতি নভেম্বরে রেমিট্যান্সের গতি বেড়েছে। প্রথম ১৭ দিনে দেশে ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগের মাস অক্টোবরের প্রথম ২০ দিনে যা ছিল ১২৪ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।

আর গত সেপ্টেম্বরের ২২ দিনে ১০৫ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ২২ অক্টোবর থেকে অধিক হারে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। ইতোমধ্যে প্রতি ডলারে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা কার্যকর করেছে সরকার। ফলে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রণোদনা কার্যকর ছাড়াও বাড়তি আরও আড়াই শতাংশ ইনসেন্টিভ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

metafore online

এরই মধ্যে তা বাস্তবায়ন করেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ফলে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এতেই মূলত রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।

দেশের আর্থিক খাতের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চলতি নভেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার ডলার

পাশাপাশি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে পৌঁছেছে ৩ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০৭ কোটি ৪ লাখ ১০ হাজার ডলার এসেছে। এছাড়া বিদেশি খাতের ব্যাংকের মাধ্যমে পাওয়া গেছে ৩৬ লাখ ডলার। এর আগে বিদায়ী অক্টোবরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। চলতি মাসে চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে তা ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া গত সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সেই সঙ্গে আগস্টে পৌঁছেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। উল্লেখ্য, গত অর্থবছরের জুলাইয়ে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার, আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার, সেপ্টেম্বরে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার এবং নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। দেশে ডলারের তীব্র সংকট চলছে।

ফলে ব্যাংকগুলো নিয়মিত ঋণপত্র (আমদানি-এলসি) খুলতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে বেশি দামে প্রবাসী আয় রেমিট্যান্স কেনার সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে করে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অ‌ক্টোব‌রে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। ডলার সংকটের কারণে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ে বড় হোঁচট খায়। ওই মাসে গত সাড়ে ৩ বছর বা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় আসে বাংলাদেশে, যা পরিমাণে ১৩৪ কোটি ডলার। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।

এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক

clipping path tech

কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন-অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এর ওপর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় তারা সভা করে ডলারের রেট নির্ধারণ করে আসছে।

সবশেষ ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের ঘোষিত দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজকে আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১১ টাকা। তবে কোনো ব্যাংকের প্রয়োজনে চাইলে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ সর্বোচ্চ দাম হবে ১১৬ টাকা। তবে আমদানিকারকদের কাছে ব্যাংকগুলোকে ১১১ টাকায় বিক্রি করতে হবে; এর বেশি নেওয়া যাবে না। কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১২৫ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২৫ টাকা পর্যন্ত।

সম্পর্কিত খবর

‘প্ররোচিত হয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা ঠিক নয়’

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version