আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ    জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ 

বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ রিপোর্ট প্রকাশ
বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ রিপোর্ট প্রকাশ

জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ 

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনেতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) চুক্তি সই করতে জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাব মর্যাদা তৈরি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানিকালে শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো অন্যতম।

এতে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য ওইসব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। ফলে ওইসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

clipping path tech

জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতের দেশ এবং এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ জাপান থেকে ২০২৯.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ১৯০১.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য জাপানে রপ্তানি করে। জাপান বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে জাপান ও বাংলাদেশ যৌথভাবে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ ডিসেম্বর দুই দেশ দেশ যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার বিষয়ে যৌথ ঘোষণা প্রদান করে। গত ২৫-২৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী’র জাপান সফরকালে উভয়দেশ দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারত্ব হিসেবে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ প্রতিবেদন দুই দেশের বিভিন্ন খাতের বিদ্যমান অবস্থা পর্যালোচনা করেছে। সরকারি, বেসরকারি, একাডেমিয়া ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্তার মাধ্যমে এ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বু

ধবার (২৭ ডিসেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের লক্ষে জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপের প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। এসময় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। বাণিজ্য সচিব বলেন, জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার।

উভয় দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও জাপানের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। এপ্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমরা জাপানে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে আসছি এবং আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত পাবো। গতবছর জাপানে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিলো ৪৫ শতাংশ যা যেকোনো উন্নত দেশের চেয়ে বেশি। উভয় দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ আরো বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন।

চূড়ান্তভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু এমন প্রশ্নের উত্তরে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এই প্রতিবেদন প্রকাশ মানেই শেষ নয়। চূড়ান্ত রূপ দেয়ার লক্ষেই দুই দেশ যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার বিষয়ে ঘোষণা দেয় এবং তিন রাউন্ডের সভা শেষে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন যা আজকে প্রকাশ করা হলো। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি ২০২৬ সালের মধ্যে উভয় দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।এর আগে দেয়া বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।

metafore online

এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের পজিটিভ ইমেজ বিল্ডিং এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানিকালে শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো অন্যতম। তিনি জানান, বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়ার লক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জাপান সফরকালে উভয়দেশ দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কে-কে কৌশলগত অংশীদারিত্ব হিসেবে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই প্রেক্ষিতে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ হিসেবে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয়। পরে জাপানের বাণিজ্য মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালেও আর একটি সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। এসময়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং জাপানের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, উভয় দেশ প্রস্তাবিত পরিবেশ রক্ষা সংস্থা (EPA) সম্পাদনের লক্ষে ব্যাপ্তি এবং কভারেজ হিসেবে ১৭টি সেক্টর চিহ্নিত করে। সরকারি, বেসরকারি, একাডেমিয়া ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্তার মাধ্যমে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। পুর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট-এ (www.mincom.gov.bd) পাওয়া যাবে।

সম্পর্কিত খবর:

নিউজিল্যান্ডকে ১৩৪ রানেই আটকাল বাংলাদেশ

Share.

Leave A Reply

Exit mobile version