নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদ সদস্য জাফর আলম ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাউদ্দিন আহমেদের কাছ থেকে ব্যখ্যা চেয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। Bd news Bangla
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ইস্যু হওয়া দুইটি চিঠিতে তাদের দুজনকে লিখিত ব্যখ্যা দিতে বলা হয়।
সংসদ সদস্য জাফর আলমকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা এলাকায় জনসমাবেশ করে নির্বাচন করার ঘোষণা ও নির্বাচনী প্রচারণা চালানো হয়। যেখানে বিশাল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হওয়ায় মহাসড়কের যান চলাচল ব্যাহত হয়।
এছাড়াও সমাবেশে সংসদ সদস্যের পুত্র তুহিনের বক্তব্যকে উস্কানিমূলক ও মানহানিকর উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।
এসমস্ত কার্যকলাপকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা- ২০০৮ এর লঙ্ঘন বলা হয় চিঠিতে। এর প্রেক্ষিতে আগামী ৩ ডিসেম্বর সকাল ১১ টায় স্বশরীরে বা প্রতিনিধি পাঠিয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করতে বলা হয় জাফর আলমকে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া সালাউদ্দিন আহমেদকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে মোটর শোভাযাত্রা করে চকরিয়া বাস টার্মিনালে জনসমাবেশ করে সালাউদ্দিন ও নেতারা বক্তব্য দেন এবং নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান।
যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা- ২০০৮ এর লঙ্ঘন বলা হয় চিঠিতে। এর প্রেক্ষিতে আগামী ৩ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টায় স্বশরীরে বা প্রতিনিধি পাঠিয়ে লিখিত ব্যখ্যা প্রদান করতে বলা হয় সালাউদ্দিন আহমেদকে।
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় হুইপ সামশুলকে শোকজ
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের দায়িত্বে নিযুক্ত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র সহকারী জজ শেখ মো. মহিবুল্লাহ এ নোটিশ দেন। Bd news Bangla
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র উল্লেখ করে জারি করা নোটিশে সামশুল হক চৌধুরীকে অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রির্টানিং অফিসারের কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান হুইপ সামশুল হক চৌধুরী।
সেখানে যাওয়ার সময় তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙঘন করে জাতীয় পতাকাবাহী গাড়ি ব্যবহার এবং পুলিশ প্রটোকল নেন।
হুইপ সামশুল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ওই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।
দ্বাদশ নির্বাচন: কোন দলের প্রার্থী কত
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে জমা হওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম। যা চলবে আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম জানিয়েছেন, এদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৩০০ সংসদীয় আসনের জন্য ২ হাজার ৭৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। যেখানে মোট ৩০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৭৪৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন
যেহেতু নির্বাচনে অংশ নিতে গতকাল ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। তাই এবার বিএনপিসহ বাকিদলগুলো ছাড়াই হচ্ছে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৯৮, জাপার ২৮৬, তৃণমূল বিএনপি ১৫১, জাসদ ৯১, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৩৪, ইসলামী ঐক্যজোট ৪৫, জাকের পার্টি ২১৮, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ ৩৯, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১৪২, কংগ্রেস ১১৬ ও ৩শ আসনে স্বতন্ত্র ৭৪৭ জন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।
এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। গর ২ নভেম্বর সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটারসংখ্যা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২ জন।