আপডেট : অক্টোবর ৩১ ২০২৩, ১২:৫৯ এএম | অনলাইন সংস্করণ ৫০ হাজার টন আলু
আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর গত দুই দিনে (গতকাল ৩১ অক্টোবর ও আজ ১ নভেম্বর) এখন পর্যন্ত ৭৭টি আবেদনের বিপরীতে ৪৯ হাজার ৭৫৫ টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, আর মাত্র একমাস পরেই বাজারে উঠবে নতুন আলু। তারপরেও এই অল্প সময়কে মাথায় রেখে সরকার গত ৩০ অক্টোবর আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কারণ, সরকারের পক্ষ থেকে খুচরা মূল্য বেঁধে দিলেও আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। আড়তদার ও কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা মিলেই আলুর দাম বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্য প্রতি কেজি আলুর দাম ৩৬ টাকা হলেও বাজারে এখনও ৬০ টাকা আবার কোথাও কোথাও ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সরকার নির্ধারিত মূল্যে কোল্ড স্টোরেজ ও খুচরা কোনও পর্যায়েই আলু বিক্রয় হচ্ছে না বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গঠিত সরকারের মনিটরিং টিম অবহিত করে
এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নেয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে আলু আমদানির অনুমোদন দেওয়ার ঘোষণা আসার পর ব্যবসায়ীরাও আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আসছেন। বুধবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত দুই দিনে মোট ৭৭টি আবেদনের বিপরীতে ৪৯ হাজার ৭৫৫ টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে প্রথম দিনে ২৮টি আবেদনের বিপরীতে ১৯ হাজার ৪০০ টন এবং দ্বিতীয় দিনে ৪৯টি আবেদনের বিপরীতে ৩০ হাজার ৩৫৫ টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সরকার প্রতিকেজি আলু ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা। বর্তমানে প্রতিকেজি আলু ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ৩০ অক্টোবর আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
ওইদিন থেকেই অনুমোদনপত্র দেওয়ার কথা জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। ওয়ানইন্ডিয়া ডটকম নামের একটি পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের বিভিন্ন শহরে বুধবার প্রতিকেজি ২০ রুপিতে আলু বিক্রি হয়েছে। এদিকে বিশ্ববাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে আলু আমদানি করবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, “ভারত থেকে আলু আমদানি করাই আমাদের জন্য সাশ্রয়ী হবে। ভারত থেকে আলু আমদানি করলে সেটা সরকার নির্ধারিত দামের ভেতরেই বাজারে বিক্রি করা যাবে।”
বাজার নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ ও ডিম আমদানির অনুমোদনও দিয়েছিল সরকার
তবে বিভিন্ন জটিলতায় ডিম আমদানি মাঝ পথে আটকে আছে। ভারতের রেগুলেটরি বাধার কারণে পেঁয়াজ আমদানি করেও বাজারে প্রভাব ফেলা যাচ্ছে না। গত সেপ্টেম্বরে সরকার প্রতিকেজি ৬৬ টাকা হিসাবে দেশি পেঁয়াজের দর বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু সেই দাম এখন ১২০ টাকারও বেশি হয়ে গেছে। গত একমাস ধরে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে থাকলেও চলতি সপ্তাহে তা এক লাফে ১০০ টাকায় পৌঁছে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত গত শনিবার পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রপ্তানি মূল্য প্রতি টন ৮০০ ডলার বেঁধে দিয়েছে। ভারতের ওই সিদ্ধান্তের খবরে ঢাকার বাজারেও পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। দেশের বাজারে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। গত দুই দিনে প্রায় ৫০ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে বুধবার (১ নভেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত সোমবার আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মঙ্গল ও বুধবার-এ দুই দিনে এখন পর্যন্ত ৭৭টি আবেদনের বিপরীতে ৪৯ হাজার ৭৫৫ টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন আমদানি হলে আলুর দাম কমে যাবে, মানুষ স্বস্তি পাবে।