সার্ভিক্স হলো জরায়ুর নিচের দিকের অংশ, যা নারীদেহের যোনি এবং জরায়ুকে সংযুক্ত করে। যখন এ জায়গার কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন হতে শুরু করে তখন তা ক্যানসারে রূপ নেয়। অনেক সময় ক্যানসার সার্ভিক্স থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী সময়ে ফুসফুস, যকৃৎ, মূত্রথলি, যোনি, পায়ুপথেও ছড়িয়ে পড়ে। নারীদের ক্যানসারজনিত রোগগুলোর মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার অন্যতম। ২০২০ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর আট হাজারের বেশি নারীর জরায়ুমুখের ক্যানসার শনাক্ত হচ্ছে। এ রোগে বছরে মারা যাচ্ছে পাঁচ হাজার নারী।
জানা যায়, নারীদের জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমাতে দেশে এক কোটি ১১ লাখ কিশোরীকে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের এইচপিভি টিকা দিতে যাচ্ছে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী; অর্থাৎ পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে এক ডোজ করে এইচপিভি টিকা পাবে। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি) বাংলাদেশকে ২৩ লাখ টিকা দিয়েছে। আরও টিকা হাতে পাওয়ার পর আগামী বছরের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে এবং একই বছরের আগস্টে বাকি পাঁচ বিভাগে এ টিকাদান কার্যক্রম চালানো হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীদের ৯৯ শতাংশ জরায়ুমুখের ক্যানসার হয়ে থাকে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস থেকে। সাধারণত এ ভাইরাসটি ছড়ায় ওই ভাইরাস আছে এমন কারও সঙ্গে যৌন মিলনের ফলে। যৌন মিলনের সময় পুরুষদের কাছ থেকে নারীদের দেহে এ ভাইরাসটি ঢুকে যায়। নারীদেহে ভাইরাসটি প্রবেশের ১০ থেকে ১৫ বছর সময়ের মধ্যে তা ক্যানসারে রূপ নেয়।
হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের ভ্যাকসিন শুধু জরায়ুমুখ ক্যানসার নয়, আরও বেশকিছু ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে। যেমন- মুখের ক্যানসার, ভ্যাজাইনাল ক্যানসার, ওরোপেরেন্সিয়াল ক্যানসার , এ্যানাল ক্যানসারও প্রতিরোধ করতে পারে।