আপডেট :মঙ্গলবার ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ১১:৪৭ পিএম |  অনলাইন সংস্করণ    লাশের

আজ তারাগঞ্জ ও পীরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সভা

লাশের

শফিউদ্দিন কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাওনাট পূর্বপাড়া ডোয়াইপাখুরি দুই নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। ‘বাবার লাশ এখনো পাইনি। সোমবার বিকেল ৩টায় বাবা মারা গেছেন। কারাগার কর্তৃপক্ষ বলেছে, বাবার লাশ দেবে। আমরা লাশের অপেক্ষায় হাসপাতালে দাঁড়িয়ে আছি। লাশ নিয়ে বাড়িতে যাব।‘আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কথাগুলো টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন পুলিশ হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া বিএনপি নেতা শফিউদ্দিনের (৭৪) ছেলে সোহেল। সোহেল বলেন, ‘গতকাল থেকে লাশের অপেক্ষায় হাসপাতালে আমরা এখনো লাশ পাইনি।’ মৃত শফিউদ্দিন কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাওনাট পূর্বপাড়া ডোয়াইপাখুরি দুই নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কারাবন্দি হাজতি গতকাল বিকাল ৩টার দিকে মারা গেছেন।

metafore online

তাকে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠিয়েছিলাম। তিনি হাসপাতালে মারা গেছেন। শফিউদ্দিনের ছেলে সোহেল বলেন, ‘গত ২৬ অক্টোবর দিনগত রাতে কাপাসিয়া থানার পুলিশ আমার বাবাকে ডোয়াইপাখুরির নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বরের একটি পুরোনো বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গাজীপুর আদালতে পাঠায়। পুলিশ তখন তার ১০ দিনের রিমান্ড চায়। অসুস্থ ও বয়স্ক বিবেচনায় বাবাকে আদালত জামিন ও রিমান্ড না দিয়ে কারাগারে পাঠান।

তিনি দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগজনিত কারণে কারাগারের হেফাজতে গাজীপুর সদর ও ঢামেক হাসপাতালে কয়েক দফা চিকিৎসাধীন ছিলেন।’ ‘সর্বশেষ গত ১০ দিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়লে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর আগে বাবা গাজীপুর জেলা কারাগারে ছিলেন’, বলেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা জানান, কারাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারা তত্ত্বাবধানে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শফিউদ্দিনের ময়নাতদন্ত শেষে তাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

এখনো সেই প্রক্রিয়া চলছে। গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মৃত শফিউদ্দিন কাপাসিয়া দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাওনাট পূর্বপাড়া ডোয়াইপাখুরি দুই নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। ৭৪ বছর বয়সী প্রাক্তন শিক্ষক শফিউদ্দিন পুলিশ হেফাজতে সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’ এ বিষয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার (ভর্তি শাখা ইনচার্জ) সৈয়দ হাসান আলী দ্য ডেইলি স্টারকে মঙ্গলবার জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষেশফিউদ্দিনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এই প্রক্রিয়া সময়ের ব্যপার। কখন শেষ হবে তা জানা নেই, তিনি বলেন। তিনি আরও জানান, শফিউদ্দিনকে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে অসুস্থ অবস্থায় আমাদের এখানে পাঠানো হয়েছিল।

রাজশাহীর কাটাখালীতে বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষের পর আগুনে পুড়ে যাওয়া বাবার লাশ নেওয়ার অপেক্ষায় ছেলে নাজমুল হক।

clipping path tech

মুঠোফোনে ছোট ভাই–বোনের সঙ্গে বাবার ছবি দেখিয়ে তাঁর কান্না থামছিল না। ছবিটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শনিবার সকালে তোলাশহীদুল ইসলাম নাজমুল হকের বাবার নাম শহীদুল ইসলাম। বয়স প্রায় ৪৬ বছর। গতকাল শুক্রবার রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের একজন তিনি। তিনি অন্য তিনটি পরিবারের সঙ্গে একাই এসেছিলেন। গতকাল তাঁকে শনাক্ত করা যায়নি।

রাতে ছেলে নাজমুল হক রংপুর থেকে রাজশাহীতে এসেছেন। সারা রাত বাবার লাশের জন্য বসে ছিলেন। আজ শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে নাজমুল হকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁর মুঠোফোনে পাওয়া গেল বাবা শহীদুল ইসলামে ছবি। এই ছবি দেখাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নাজমুল। এক বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে নাজমুল সবার বড়। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার দুরামিঠিপুর গ্রামে। বাবা শহীদুল ইসলাম কৃষিকাজ আর মৌসুমি ব্যবসা করতেন। নাজমুল বলেন, প্রতিবছর এই দলের সঙ্গে তাঁর বাবা বেড়াতে যান। এবার রাজশাহীতে এসেছিলেন। বেলা তিনটার দিকে তিনি দুর্ঘটনার খবর পান।

একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে রাত ১০টার দিকে তিনি রাজশাহীতে পৌঁছান। সেই থেকে বাবার লাশের অপেক্ষায় বসে আছেন তিনি। মৃত ব্যক্তিদের ডিএনএর নমুনা সংগ্রহ ও পুলিশের আনুষ্ঠানিকতার জন্য লাশ পেতে দেরি হচ্ছে বলে তিনি জানান। নাজমুলের মুঠোফোনে পাওয়া যায় তাঁর ছোট ভাইবোনের সঙ্গে বাবা শহীদুল ইসলামের ছবি। এই ছবি দেখে কান্না আর থামাতে পারেননি তিনি। গতকাল দুপুরে রাজশাহীর কাটাখালী থানার সামনে মাইক্রোবাস ও যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে মাইক্রোবাসে আগুন ধরে যায়। এই আগুনে পুড়ে মাইক্রোবাসের ১৭ আরোহী মারা যান। নাজমুলের মতো আরও তিনটি পরিবারের সদস্যরা রাত থেকে লাশের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপেক্ষায় আছেন।

সম্পর্কিত খবর:

যতই কেরামতি করেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার পাবেন না: রিজভী

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version