নির্বাচন ঘিরে টানা হরতাল–অবরোধের চিন্তা বিএনপির

৭ জানুয়ারির ‘ডামি ভোট’ বর্জনে জনমত গড়তে আরও দুই দিন গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ করবে বিএনপি।

অর্থাৎ বছরের শেষ দিন আজ ৩১ ডিসেম্বর এবং আগামীকাল ১ জানুয়ারি খ্রিষ্টীয় নববর্ষের প্রথম দিনেও গণসংযোগ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভোটের আগে এটি গণসংযোগের শেষ কর্মসূচি হতে পারে। এরপর ২ জানুয়ারি থেকে অবরোধ বা হরতাল কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি। গতকাল শনিবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দুই দিনের গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একটি হচ্ছে, ২ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনের পরদিন ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা হরতাল বা অবরোধের কর্মসূচি অথবা মাঝে দুই দিনের বিরতি দিয়ে প্রথমে অবরোধ, পরে হরতালের কর্মসূচি।

metafore online

তবে কোনোটিই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। রিজভী জানান, বছরের শেষ দিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন মানুষের উৎসবের মেজাজের কথা বিবেচনা করে কঠোর কিছুতে না গিয়ে গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। ‘অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবি এবং একতরফা নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে’ ২০ ডিসেম্বর থেকে এ কর্মসূচি চলছে। বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর কাছ থেকে জানা গেছে, ১ জানুয়ারির পর নতুন বছরে পরবর্তী কর্মসূচি হবে কঠোর।

এ ক্ষেত্রে দুই রকম কর্মসূচির চিন্তা করা হচ্ছে।

একটি হচ্ছে, ২ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনের পরদিন ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা হরতাল বা অবরোধের কর্মসূচি অথবা মাঝে দুই দিনের বিরতি দিয়ে প্রথমে অবরোধ, পরে হরতালের কর্মসূচি। তবে কোনোটিই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভোট বর্জনে জনমত গড়ার লক্ষ্যে শুরু করা গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণের কর্মসূচিতে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত সারা দেশের সব সাংগঠনিক ইউনিট থেকে ৫০ লাখের বেশি প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে। আজ ও আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত এ কর্মসূচির সময় বাড়ানো হয়েছে। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রতিদিনই রাজধানীর কোথাও না কোথাও প্রচারপত্র বিতরণ করছেন।

গতকাল সকালে তিনি উত্তরার ১২ ও ১৩ নম্বর সেক্টর এলাকায় দোকানপাট ও পথচারীদের মধ্যে গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিলি করেন। রুহুল কবির রিজভী গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করতে হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে আমি রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণ করেছি। রাস্তাঘাটে, ফুটপাতে, কাঁচাবাজারে লিফলেট হাতে নিয়ে সাধারণ মানুষের চোখেমুখের যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া, সেটা অভাবনীয়।’২০ ডিসেম্বর থেকে বিএনপি এ কর্মসূচি নেয়। এ পর্যন্ত তিন দফায় আট দিন তারা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে সারা দেশে গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি করে। আজ, আগামীকালসহ মোট ১০ দিন এ কর্মসূচি হবে। এরপর তারা নতুন কর্মসূচিতে যাবে। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দল ও জোট পৃথকভাবে এ কর্মসূচি করছে।

clipping path tech

পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলকে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করতে হচ্ছে।

কয়েক দিন ধরে আমি রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণ করেছি। রাস্তাঘাটে, ফুটপাতে, কাঁচাবাজারে লিফলেট হাতে নিয়ে সাধারণ মানুষের চোখেমুখের যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া, সেটা অভাবনীয়। রুহুল কবির রিজভী জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, ভোট বর্জনের আহ্বানে তারা সারা দেশে ৮৭টি সাংগঠনিক ইউনিট থেকে মোট ভোটারের ন্যূনতম ১০ শতাংশের মধ্যে লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি দিয়েছে।

এ ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২–দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, জেএসডি, গণফোরাম, গণ অধিকার পরিষদ, লেবার পার্টিসহ বিভিন্ন দল এ কর্মসূচি পালন করছে। গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশের অভিযানে পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর থেকে চার দফায় ৫ দিন হরতাল এবং ১২ দফায় ২৩ দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দল ও জোট। এর মধ্যে ভোট বর্জন ও সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগের ডাক দিয়ে চতুর্থ দফায় গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।

সম্পর্কিত খবর:

রাজশাহীতে নির্বাচনী প্রচারে জীবন্ত ঈগল, অনুসন্ধান কমিটির কাছে অভিযোগ

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version