৪ হাজার গাছের নজরকাড়া ছাদবাগান

ছাদজুড়ে কাঠগোলাপ, অ্যাডেনিয়াম, কাঁটামুকুট, বাগানবিলাস, সেন্সিভেরিয়াসহ দেশি-বিদেশি চার হাজারের বেশি গাছ। বিরল প্রজাতির মধ্যে অঞ্জন, জাকারান্ডা, বরুণ, তাল কোবরা, রুদ্র পলাশ, লাল কদম, হলুদ পলাশ, হলুদ শিমুল, গোলাপি সোনালুসহ আরও অনেক প্রজাতির গাছ। গাছগুলোতে ফুটেছে বর্ণিল সব ফুল। ফুলের হাসি ও বৃক্ষলতায় ছাদে অন্য রকম এক পরিবেশ। ৪ হাজার ২০০ বর্গফুটের নজরকাড়া এই ছাদবাগান করেছেন সুতা ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন ও ইভা আক্তার দম্পতি।

clipping path tech

তাঁদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর পতেঙ্গা মোড় এলাকায়।

চার বছর ধরে এই দম্পতি সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছেন এই ছাদবাগান। নজরকাড়া ছাদবাগান দেখতে ভিড় করেন অনেকে। আগ্রহী অনেকে আবার ছাদবাগান করতে তাঁদের কাছ থেকে পরামর্শ নেন। হাসিমুখে এই দম্পতি আগ্রহী ব্যক্তিদের নানা তথ্য দেন। ৮ ও ৯ তলা মিলিয়ে এই ছাদবাগানের অবস্থান। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের প্রবেশমুখ নান্দনিক সব সেন্সিভেরিয়া দিয়ে সাজানো। এরপর বিভিন্ন প্রজাতির কাঠগোলাপের রাজত্ব। সঙ্গে দেশি বিভিন্ন রকমের ফুলের গাছ, লিলি ও ফার্নজাতীয় উদ্ভিদ। সিঁড়ি দিয়ে নবম তলায় উঠতেই অ্যাডেনিয়ামের বাগান। সঙ্গে রংবেরঙের বাগানবিলাস। কাঁটামুকুটের বনসহ দেশীয় বিরল প্রজাতির ফুল গাছ।

একটু এগোলে কাঠগোলাপের বর্ণিল সব প্রজাতি। এরপর গ্রিন হাউসে ফিলো ড্যানড্রন, মনস্টেরিয়া, সিনডাপসাস, অ্যান্থোরিয়াম, পথস, ব্রুমলিয়া, হয়া, ক্যালাডিয়ামসহ অনেক গাছের অ্যারোয়েড জগৎ। সবশেষে দেখা গেল কডেক্স ও ক্যাকটাসের নানা প্রজাতি। এই দম্পতির দুই সন্তান ১০ বছর বয়সী ফাতেমা-তুজ-জোহরা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে ও খাদিজাতুল কোবরার বয়স চার মাস। ফাতেমা অনেক ফুল গাছের নাম বলতে পারে। মা–বাবার সঙ্গে গাছের যত্ন করে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ছাদবাগান আছে ১ হাজার ৪৪টি। এসব ছাদবাগানে ড্রাগন, তিন ফল, বিভিন্ন জাতের আম, জলজ পদ্ম, ডালিম, পেয়ারা, মাল্টা, বনসাই, সফেদা, কমলাসহ ফুল-ফলের গাছ আছে। গত চার বছর আগে দুটি গোলাপ, দুটি নাগ চাপা, দুটি ক্যাকটাস, দুটি ক্যাপসিকামসহ মোট আটটি গাছ দিয়ে বারান্দায় বাগান শুরু করেন ইভা আক্তার। গাছের পরিচর্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যত দুশ্চিন্তা থাকুক না কেন, বাগানে এলে তা চলে যায়। এটা মানসিক প্রশান্তির জায়গা। প্রশান্তির জায়গা চিন্তা করলে খরচটা গায়ে লাগে না। গাছগুলোকে সন্তানের মতো লালন করি।

metafore online

গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকেই ছাদবাগান করা।’ নতুন প্রজন্মকে গাছের সঙ্গে পরিচিত করতে জামাল উদ্দিন ও ইভা আক্তার দম্পতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গ্রুপ খুলেছেন।

এ গ্রুপের মাধ্যমে সদস্যরা একে অন্যের সঙ্গে গাছ আদান-প্রদান করে থাকেন।জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গাছের পরিচর্যা করা কষ্টকর। তবে গাছের সঙ্গে থাকা, সবুজের সঙ্গে থাকার অন্য রকম ভালো লাগা ও ভালোবাসা থেকে এই ছাদবাগান করা। আশপাশের অনেকেই তাঁদের ছাদবাগান দেখতে আসেন, পরামর্শ নেন। এটা ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, বাড়ির ছাদে অনেকে ফল ও ফুলের বাগান করছেন। ছাদবাগানের কারণে বাড়িতে গরম কম হয়। টাটকা শাকসবজি, ফলমূল ও মসলা মানুষের চাহিদা পূরণ করে। সবুজ প্রকৃতি মানুষের চোখকে আরাম দেয়, বিষণ্নতাকে ছুটি দেয়।

সম্পর্কিত খবর:

ঢাকার বাতাস আজ ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version