গত এক বছরের বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো ডলারের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) থেকে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনায় ডলারের দাম কমবে ৫০ পয়সা। পাশাপাশি আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রিতেও দাম কমবে ৫০ পয়সা।বুধবার (২২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) মধ্যে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। Bd news Bangla
সম্পর্কিত খবর
- ডিম-আলু-পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিল সরকার
- ডলারের দাম বাড়ায় চিনির দাম কমছে না
- অপ্রয়োজনে ৯০ শতাংশ ব্যয়
এবিবি’র চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার ভালো অবস্থানে থাকায় টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কমেছে।
বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, আগে আমাদের চলতি হিসাবে ঘাটতি কাটিয়ে উদ্বৃত্ত হয়েছে। যা দেড় বছর আগেও প্রায় ১৮ বিলিয়ন ঘাটতি ছিলো। যা বর্তমানে প্রায় ৯ বিলিয়ন উদ্বৃত্ত রয়েছে। সেই হিসাবে বাজারে ডলারের সংকট থাকার কথা না। বর্তমানে ডলার বাজারের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, সেটি প্রকৃত চিত্র নয়।
তিনি বলেন, এখন বাজারে ডলারের দর বাড়ার যে প্রবণতা, সেটি থাকার কোনো কারণ নেই।
এর আগে, ৩১ অক্টোবর এবিবি ও বাফেদা রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয়ের জন্য ডলারের আনুষ্ঠানিক ক্রয়-বিক্রয় হার যথাক্রমে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং ১১১ টাকায় বাড়ায়। এর আগে ব্যাংকগুলো ১১০ টাকায় ডলার কিনে তা ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করতে পারত।
ঘোষিত অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি ডলারের আন্তঃব্যাংক বিক্রয় হার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।
ব্যাংকগুলোকে তাদের মাসিক রেমিট্যান্স আয়ের ১০ শতাংশ আন্তঃব্যাংক বাজারে বিক্রি করতে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ যদি কোনো ব্যাংক অক্টোবরে ১০ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পায়, তাহলে নভেম্বরে আন্তঃব্যাংক বাজারে অন্য ব্যাংকগুলোর কাছে এটিকে এক মিলিয়ন ডলার বিক্রি করতে হবে। Bd news Bangla
তবে ব্যাংকগুলো এখনো গ্রাহকদের কাছে সর্বোচ্চ ১১১ টাকা হারে ডলার বিক্রি করতে পারবে।
দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টমস হাউজে ব্যাপক কড়াকড়ি, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হয়রানির কারণে কমেছে আমদানি বাণিজ্য। ফলে বড় ধরনের ধস নেমেছে রাজস্ব আদায়ে। গত চার মাসে ৩১৩ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিগত কয়েক বছর যাবত এ অবস্থা চলে আসলেও কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যার ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হোক আর না হোক নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিকই পূরণ হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্বে ধ্বস: ৪ মাসে ৩১৩ কোটি টাকার ঘাটতি
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বর্তমানে অতীতের তুলনায় এত বেশি কড়াকড়ি আরোপ, নিত্য নতুন হয়রানি ও মনগড়া এইচ এস কোড পরিবর্তনের কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা অন্য বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। কতিপয় কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও হয়রানির কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রভাবে সরকারের রাজস্ব আয় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা নিশ্চিত হলে বাণিজ্যে আবারও গতি ফিরবে বন্দরে। ক্ষোভের সাথে তারা বলেন, উচ্চ পচনশীল পণ্যের ক্ষেত্রে ২-৩ কেজি বেশি হলেও ডিউটি না দিয়ে ছাড়ছে না। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সরকারের ও নিজেদের দিকটাই শুধু দেখছে, ব্যবসায়ীদের কোনো ছাড় দিচ্ছে না। এছাড়া যে সব পণ্যের ডিউটি উচ্চতর সে সব পণ্য বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, শুল্ক ফাঁকি রোধে কড়াকড়ি আরোপ করায় রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধাগুলো বড়াতে তারা আন্তরিক ভাবে কাজ করে চলেছেন।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ ওয়্যারহাউজিং কর্পোরেশনের অধীনে বেনাপোল দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি ও রফতানির কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০২ সালে মর্যাদা পায় স্থলবন্দরের। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানির বাণিজ্যে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সময় মোটরপার্টস, ফেব্রিকস, আয়রন, স্টিল, মোটরগাড়ি, ফল আমদানিতে মুখর থাকতো বেনাপোল স্থলবন্দর। কিন্তুু এখন এসব আমদানিকারকদের আনাগোনা নেই এ বন্দরে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাাশি কমেছে সরকারের বিপুল রাজস্ব আয়। Bd news Bangla
আমদানিকারকদের অভিযোগ ডকুমেন্ট ঠিকমতো সারমিট করছেন তারা। কিন্তুু পণ্যে এইচ এস কোড ও আমদানি মূল্য নিয়ে প্রতিনিয়ত জটিলতা তৈরি করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। যার ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি মাছ ও ফুলমূলের মতো উচ্চ পচনশীল পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। আগে আপেল আমদানিতে শুল্ক ছিল ৬১.৬৫ টাকা যা চলতি অর্থ বছরে দাঁড়িয়েছে ৮৯.২২ টাকা। তাদের মতে এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে আমদানি কমেছে।