ঢাকায় মেট্রোরেলের শাহবাগ ও কারওয়ান বাজার স্টেশন চালু হয়েছে আজ রোববার। এর মাধ্যমে এমআরটি ৬ লাইনের দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬ স্টেশনই চালু হলো। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ও ১৪তম স্টেশন হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজয় সরণি চালু হয়। বছরের শেষ দিনে চালু হলো আরও দুটি স্টেশন। সকাল ৮টা ৪ মিনিটে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মাহমুদ হোসেন নামেন কারওয়ান বাজার স্টেশনে। মিরপুরের কাজীপাড়া থেকে ১১ মিনিটে কর্মস্থলে পৌঁছেছেন তিনি। আগে ফার্মগেট স্টেশনে নেমে হেঁটে কারওয়ান বাজারে আসতে হতো বলে জানালেন। এখন সরাসরি কারওয়ান বাজারেই নামতে পেরে খুশি তিনি। মেট্রোরেলের কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ স্টেশন চালু হয়েছে আজ থেকে।
কারওয়ান বাজার, ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ স্টেশন চালু হয়েছে আজ থেকে।
কারওয়ান বাজার, ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বরছবি: মাহবুব আলম দিনে ১ লাখ ৩০ থেকে ১ লাখ ৫৬ হাজার পর্যন্ত যাত্রী মেট্রোরেলের ট্রেনে ভ্রমণ করেন। গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মেট্রোরেলের নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক। গত বছর থার্টি ফার্স্টের রাতে ওড়ানো ফানুস মেট্রোরেলের ক্যাটানারিতে পড়ায় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছিল। তাই এবার ফানুস ওড়ানো বন্ধের ব্যবস্থা নিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে সব স্টেশন চালু হলেও আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন আগের মতোই সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই অংশে ট্রেন দিয়াবাড়ি-আগারগাঁও অংশের মতো রাত পর্যন্ত চলবে।ভোর থেকেই মেট্রোরেলের শাহবাগ স্টেশন ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে রাখেন কর্মীরা।
এরপর সকাল হতেই লিফট ও এসকেলেটর চালু হয়ে যায়। টিকিট কাউন্টারে বসে আছেন কাস্টমার রিলেশন অপারেটররা। সকাল সাড়ে ৭টা বাজতেই সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় শাহবাগ স্টেশন। এরপর নতুন যাত্রীদের নিরাপত্তাকর্মীরা শিখিয়ে দেন কীভাবে উঠবেন মেট্রোরেলে। এভাবেই রোববার (৩১ ডিসেম্বর) শাহবাগের সঙ্গে কারওয়ান বাজার মেট্রোরেল স্টেশনও চালু হয়ে যায়। এর মাধ্যমে খুলে যায় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনের সবকটিরই দুয়ার। এতে স্বপ্নের যাত্রার পূর্ণতা পায় রাজধানীবাসীর। এ যেন পূর্ণ হয় মেট্রোরেলের ষোলকলা। এতে এ পথের যাত্রীরাও খুশি। কারওয়ান বাজার-শাহবাগে থামছে ট্রেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে কর্মরত জাকির হোসেন শাহবাগ স্টেশনে নামেন।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, খুবই কমফোর্টেবল (আরামদায়ক)। আমার জন্য ভালো হয়েছে। মেট্রোরেলের এ উদ্যোগের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ‘অন্যরকম ইলেকট্রনিকসে’র টেকনিশিয়ান শরীফ শেখ ধানমন্ডি-১৫ থেকে এসেছেন মতিঝিলে তার অফিসে যাওয়ার জন্য। তিনি বলেন, মেট্রোরেলে আমাদের যাতায়াত সহজ হবে। আমরা কম সময়ে যেতে পারবো। তবে ভাড়াটা বাসের চেয়ে একটু বেশি। কারওয়ান বাজার-শাহবাগে থামছে ট্রেন বছরের শেষদিনে চালু হলো মেট্রোরেলের শাহবাগ ও কারওয়ান বাজার স্টেশন। এর ফলে মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশনই চালু হলো। সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল আটটা বেজে ৪ মিনিটে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে কারওয়ান বাজার স্টেশনে প্রথম মেট্রোরেল এসে পৌঁছায়।
গত ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর ইস্কাটনে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ স্টেশন চালুর বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আজ সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন চালু হলো।জানা গেছে, দিনে ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫৬ হাজার পর্যন্ত যাত্রী মেট্রোরেলের ট্রেনে ভ্রমণ করেন। এর আগে ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ও ১৪তম স্টেশন হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজয় সরণি চালু হয়। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো হলো- উত্তরা-উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় দেশের প্রথম মেট্রোরেলের। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রায় এক বছর পর গত ৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। তবে প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, কারওয়ান বাজার, শাহবাহ ও বিজয় সরণিসহ কয়েকটি স্টেশন চালু হতে সময় লাগে। গত ১৩ ডিসেম্বর চালু হয় টিএসসি ও বিজয় সরণি স্টেশন। আর বছরের শেষ দিনে চালণু হলো বাকি থাকা দুই স্টেশন, কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ। আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের আইটি বিভাগে কর্মরত সাদমান সাকিব জাগো নিউজকে বলেন, আমার বাসা শাহবাগে। আমি অফিসে যাওয়ার জন্য আগে টিএসসির স্টেশন ব্যবহার করতাম। এখন এখান থেকে ব্যবহার করতে পারছি।
এতে আমার জন্য সুবিধা হয়েছে। সময়ের সাশ্রয় হয়েছে। আর যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা-উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ধাপে ধাপে বাকি স্টেশনগুলো খুলে দেওয়া হয়। মেট্রোরেলের পথটির নাম এমআরটি লাইন-৬, যা ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ। এ পথে স্টেশন মোট ১৭টি। এরমধ্যে ১৬টি স্টেশন সম্পূর্ণভাবে চালু হয়েছে। এখন শুধু বাকি থাকলো কমলাপুর স্টেশন, যা ২০২৫ সালে চালু হবে। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো হলো- উত্তরা-উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর।