প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ৩৯| অনলাইন সংস্করণ চাঁদপুরে সাংবাদিককে পিটিয়ে
চাঁদপুরে সাংবাদিককে পিটিয়ে
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় দৈনিক কালবেলা পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি মমিনুল ইসলামকে (৩০) দুর্বৃত্তরা পিটিয়ে জখম করেছে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার ঘনিয়ারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিক বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। সাংবাদিক মমিনুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার দেওনায়নজী কান্দি গ্রামে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক কালবেলা ও চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক আদি বাংলা পত্রিকার মতলব উত্তর উপজেলা প্রতিনিধি। লিখিত অভিযোগে মমিনুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, গত ১০ নভেম্বর দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় মতলব উত্তর উপজেলার ঘনিয়ারপাড় এলাকার মো. আমির হোসেন মোল্লা, মো. রাজিব মৃধা ও মো. মিজান মোল্লার বিরুদ্ধে গরু চুরি, মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা নিয়ে তাঁর করা একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এটি প্রকাশের পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিদিন বিভিন্নভাবে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
আজ বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা পরিষদে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি।
কিছু দূর আসার পর কয়েকজন সঙ্গীসহ ওই তিন ব্যক্তি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। এরপর তাঁকে লোহার রড, লোহার ছেনা ও লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। এতে তাঁর পিঠ, মাথা, দুই হাতসহ শরীর বিভিন্ন অংশে জখম হয়। একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। এরপর স্বজনেরা এসে মমিনুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মমিনুল ইসলামের অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। তাঁর চিকিৎসা চলছে।
অবস্থার উন্নতি না হলে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে হবে বলে জানান তিনি। মমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হামলাকারীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গরু চুরি, মাদক সেবন, বিক্রিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সেগুলো নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় আপাতত থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। পরে মামলা করবেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মো. আমির হোসেন মোল্লা, মো. রাজিব মৃধা ও মো. মিজান মোল্লার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনার পর থেকে তাঁরা এলাকায় নেই। মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ মোবারক বলেন, এ–সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি।
তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক কালবেলার চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ মমিনুল ইসলামের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেধরক পিটিয়েছে স্থানীয় মাদক কারবারীরা।
মমিনুল(৩৩) উপজেলার ছেঙ্গারচর পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের দেওয়ানজিকান্দি গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে। ১৬ ডিসেম্বর শনিবার সকালে মতলব উত্তর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সামনের পাকা রাস্তার উপর এ হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলাকারীরা হচ্ছেন মোঃ আমির হোসেন মোল্লা (৪৫),মোঃ রাজিব মৃধা (২৮),মোঃ মিজান মোল্লা (৩৭)সহ আরও ৬/৭ জন। তারা প্রত্যেকেই ছেংগারচর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ঘনিয়ারপাড়ের বাসিন্দা। স্থানীয় মোঃ শাহাজালাল বেপারী, মোঃ বজলুল গনি, মোঃ ইমরান হোসেন, মোঃ সাব্বির লস্করসহ দেওয়ানজিকান্দি এলাকার বাসিন্দারা বলেন, মমিনুল খুবই নম্র ভদ্র ছেলে এবং পেশাদার একজন সাংবাদিক। অতছ তার ওপর হামলা চালানো আমির ও মিজান হচ্ছে ইয়াবা কারবারী। এছাড়াও তাদের নামে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে থানায়।
পুলিশ তাদের নানা সময়ে ধরলে সে সংবাদ পত্রিকায় আসলে ওরা মমিনুলকে চোখের সামনে দেখে সন্দেহ করে হুমকি ধমকি দিতো। স্থানীয়রা আরও বলেন, সাম্প্রতি সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমির ও মিজানের ইয়াবা সেবনের ভিডিও ভাইরাল হয়। একই সাথে মিজানকে গরু চুরির অপরাধে পুলিশ আটকের ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। আর এই ভিডিও ভাইরাল ও পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশে মমিন জড়িত সন্দেহে তার ওপর এই অতর্কিতভাবে অমানবিক হামলা চালানো হলো। আমরা একজন ন্যায়পরায়ন সাংবাদিকের ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। এ বিষয়ে দৈনিক কালবেলার আহত সাংবাদিক মমিনুল ইসলাম বলেন, মতলব উত্তর উপজেলা মাঠে আয়োজিত মহান বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে পেশাগত দায়িত্ব শেষ করে আমার নিজস্ব মোটর সাইকেলযোগে নিজ বাড়ীতে যাওয়ার জন্য রওনা দেই।
পথেমধ্যে ওৎ পেতে থেকে সন্ত্রাসীরা আমাকে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করে।
হামলার সময় ওরা আমার মোবাইল ও প্যান ড্রাইভ ছিনতাই, মোটরসাইকেল ভাঙ্গচুর এবং মানিব্যাগে থাকা নগদ অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি আইনের কাছে ন্যায় বিচার পেতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ প্রসঙ্গে হামলাকারীরা গা ঢাকা দেয়ায় কারোরি বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ওসি রাশেদ মোবারক বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অপরাধীরা যেই হউক কোন ছাড় দেয়া হবেনা। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত সাংবাদিক নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম চাঁদপুর জেলাসহ মতলব উত্তরে কর্মরত সাংবাদিক সমাজ ও বিভিন্ন সুধী মহল।
দায়সারা তদন্তের পর সাক্ষ্য দেননি কর্মকর্তা, মাদক মামলার আসামি খালাস