আপডেট :মঙ্গলবার ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ০৫:২১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ প্রতিদ্বন্দ্বী
প্রতিদ্বন্দ্বী
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কারো চাপে নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আর তাই আমি নিজে সরে দাঁড়ালাম।’ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর, কাঁঠালিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এম মনিরুজ্জামান নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান ওমরের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মনির এই ঘোষণা দেন।
মনিরের সঙ্গে রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আলম সরফরাজসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কারো চাপে নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর তাই আমি নিজে সরে দাঁড়ালাম।’ এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর এক সভায় শাহজাহান ওমরের পক্ষে নির্বাচনে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ আসনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মনিরুজ্জামানকে বিজয়ী করার লক্ষে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয় সভায়। এর দুই দিন পরই রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে শাহজাহান ওমরের দ্বন্দ্ব নিরসনে বরিশালে তাদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। বরিশালের বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ শাহজাহান ওমরের পক্ষে ভোট চাইতে নামেন।
এর এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এম মনিরুজ্জামান।“
আশা করেছিলাম, তিনি আমাদের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসবেন। কিন্তু আমাদের না ডেকেই অবহেলা করে তার নির্বাচনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।”‘রাজাকারের সন্তান’ ও বিএনপির লোকজন নিয়ে নির্বাচনি প্রচার করার অভিযোগে ঝালকাঠি-১ আসনের সদ্য নৌকায় যোগ দেওয়া শাহজাহান ওমরকে বর্জন করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনজীবী এ এইচ এম খায়রুল আলম সরফরাজ বলেন, “১৮ ডিসেম্বর আমরা আলোচনা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা রেজুলেশন করি।
” তিনি অভিযোগ করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই শাহজাহান ওমর নির্বাচনি এলাকায় কাঠালিয়া ও রাজাপুরে চিহ্নিত রাজাকারের সন্তান ও স্বাধীনতা বিরোধীসহ বিএনপির লোকজন নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। “আমরা আশা করেছিলাম, তিনি (শাহজাহান ওমর) আমাদের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসবেন। কিন্তু আমাদের না ডেকেই অবহেলা করে তার নির্বাচনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।” মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সরফরাজ আরও বলেন, “১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময় শাহজাহান ওমর আমাকে নিজে মারধর করেন।
ওমর ও তার বাহিনীর কাছে জোট সরকার আমলে রাজাপুর-কাঠালিয়ার অসংখ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা, মামলা, লাঞ্ছিত হয়েছেন। “অনেকের বাড়ি-ঘর কিংবা সম্পদও লুটে হয়েছে।
এসব ব্যাপারেও শাহজাহান ওমরের আমাদের সঙ্গে বসে দুঃখ প্রকাশ করা নৈতিক দায়িত্ব ছিল। তা হলেই আমরা সব ভুলে গিয়ে তার পক্ষে কাজ করতে পারতাম।” রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আলম সরফরাজ বলেন, “আমরা এখন বাধ্য হয়েই ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনিরের পক্ষে কাজ করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
” এ বিষয়ে নৌকায় উঠা বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের ব্যবহৃত মোবাইলে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এর আগে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন শাহজাহান ওমর। ২৯ নভেম্বর হঠাৎ করে তিনি জামিন পান। তার পরেই তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে গুঞ্জন ছড়ায়। পরে আওয়ামী লীগ তাকে ওই আসনে নৌকার প্রার্থী করে। অথচ ২৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগ যে মনোনয়নের তালিকা ঘোষণা করেছিল, সেখানে ঝালকাঠি-১ আসন দেওয়া হয়েছিল বর্তমান সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনকেই। তবে শেষ বেলায় তাকে হতাশ হতে হয়।