আপডেট :০৬ জুন ২০২০, ০৯:০৭ এএম | অনলাইন সংস্করণ ধানমন্ডি সিকিউরিটিজ
ধানমন্ডি সিকিউরিটিজ
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ ধানমন্ডি সিকিউরিটিজ লিমিটেড (ট্রেক নম্বর: ৯৮) পুনরায় পরিদর্শন করার জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এক মাসের মধ্যে পরিদর্শন করে হালনাগাদ অবস্থার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ধানমন্ডি সিকিউরিটিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন কার্যক্রম চলাকালে স্টক এক্সচেঞ্জের চাহিদা মোতাবেক প্রযোজনীয় তথ্য, ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড ও দলিলাদি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সরবরাহ করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনদলকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের মার্জিন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ আইন পরিপালন করেনি।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবেও অসঙ্গতি পেয়েছে কমিশন। ধানমন্ডি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) প্রবিধানমালা, ২০২০ এর বিধি ৫(খ); সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০ এর রুলস ১৭(৪); সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৮; মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর রুলস ৩(১) ও ৩(২); সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৬(ক)।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০ এর রুলস ৬(১) ও ৬(৫); বিএসইসির ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জারি করা নির্দেশনা; সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ এর বিধি ১১ এবং সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০ এর দ্বিতীয় তফসিলের আচরণ বিধি ১ লঙ্ঘন করার প্রমাণ মিলেছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেহ হাউজ তামহা সিকিউরিটিজের আত্মসাৎকৃত অর্থ বিনিয়োগকারীদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সম্প্রতি ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে এ নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি।
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকরা সবাই মিলে বিনিয়োগকারীদের পাওনা পরিশোধের কথা জানিয়েছে। আগামী ৩১ মের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের পাওনা পরিশোধের জন্য ডিএসইতে টাকা জমা দিতে হবে। এই টাকা থেকে গ্রাহকদের পাওনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডিএসই তা নিষ্পত্তি করবে। বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধের বিষয়টি প্রতি সপ্তাহে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
এদিকে, ইতোমধ্যে তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হারুনুর রশিদ ও তার সহযোগীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিএসইসির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএফআইইউ গত ৫ জানুয়ারি এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তামহা সিকিউরিটিজ ও প্রতিষ্ঠানটির এমডির স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এর আগে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠায় গত ডিসেম্বরের ৯ তারিখে ডিএসই তামহা সিকিউরিটিজের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে।
এদিকে, তামহা সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পর বিএসইসি ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। গঠিত তদন্ত কমিটি এ অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়। কমিটির সদস্যরা আরও জানতে পারে, ব্রোকারেজ হাউসটি তার প্রায় দুই হাজার গ্রাহকদের শেয়ার ও জমাকৃত অর্থের হিসাব রাখতে দুটি পৃথক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে। তারা একটি দিয়ে প্রকৃত তথ্য এবং অন্যটি দিয়ে ভুয়া প্রতিবেদন তৈরি করত। দুটি পৃথক ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করায় বিনিয়োগকারীরা প্রকৃত তথ্য জানতে পারেনি। এভাবে প্রায় দুই হাজার গ্রাহক তামহা সিকিউরিটিজের কাছে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তামহা সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৮৭ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।