আপডেট : ডিসেম্বর ২৬, ২০২০ ০৯:১৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ অভিনেতা আবদুল
অভিনেতা আবদুল
জনপ্রিয় অভিনেতা আব্দুল কাদের আর নেই। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে আজ শনিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন। আব্দুল কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি আজ সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন আবদুল কাদের।
উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ ডিসেম্বর চেন্নাইতে নেয়া হয় আবদুল কাদেরকে।
সেখানকার হাসপাতালে পরীক্ষার পর ১৫ ডিসেম্বর তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, তার অবস্থা সঙ্কাটাপন্ন, ক্যানসার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। শারীরিক দুর্বলতার কারণে তাকে কেমোথেরাপি দেয়া হয়নি। আবদুল কাদের নাটক, বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্র- তিন মাধ্যমেই জনপ্রিয়।
তিনি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান। ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে দুলাভাই চরিত্রে প্রশংসিত হয়েছেন। ‘রং নাম্বার’সহ বেশ কিছু সিনেমাতে অভিনয় করেছেন তিনি।আব্দুল কাদের (১ এপ্রিল ১৯৫১ – ২৬ ডিসেম্বর ২০২০, ঢাকা)[১] বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান নাট্যকার এবং অভিনেতা ছিলেন। ১৯৯৪ সালে কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে তিনি বদি চরিত্রে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। বাংলাদেশের টেলিভিশন দর্শকদের কাছে তিনি ‘বদি’ নামে পরিচিতি পান। এছাড়া তিনি জনপ্রিয় বাংলাদেশী ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে তার অভিনয়ের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন।
আব্দুল কাদের অভিনয়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও মূল পেশা হিসাবে তিনি একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৪] আব্দুল কাদের ১৯৫১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতা আবদুল জলিল এবং মাতা আনোয়ারা খাতুন। তিনি সোনারং হাইস্কুল ও বন্দর হাইস্কুল থেকে এস.এস.সি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও এমএ করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন ১৯৭২-৭৪ পর্যন্ত পরপর তিন বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মহসিন হল ছাত্র সংসদের নাট্যসম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ডাকসু নাট্যচক্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।
১৯৭৩ সাল থেকে থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য এবং চার বছর যুগ্ম-সম্পাদকের ও ছয় বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি থিয়েটারের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) হিসেবে ছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকায় আমেরিকান কলেজ থিয়েটার ট্রুপ কর্তৃক আয়োজিত অভিনয় কর্মশালায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। আবদুল কাদের বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাট্যশিল্পী ও নাট্যকারদের একমাত্র সংগঠন টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদ’ টেনাশিনাস -এর সহ-সভাপতি ছিলেন।[৫][৬][৭] তার পেশাগত জীবন শুরু হয়েছিল শিক্ষকতা দিয়ে।
তিনি সিংগাইর ডিগ্রি কলেজ ও লোহাজং কলেজে অর্থনীতিতে শিক্ষকতা করেন। পরে বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অমল চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার প্রথম নাটকে অভিনয় শুরু করেছিলেন। ১৯৭২ সালে আন্তঃহল নাট্য প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন মহসিন হলের নাটক সেলিম আল দীন রচিত ও নাসিরউদ্দিন ইউসুফ নির্দেশিত ‘জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন’ -এ সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার লাভ করেছিলেন। ১৯৮২ সাল থেকে টেলিভিশন ও ১৯৮৩ সাল থেকে রেডিও নাটকে অভিনয় শুরু করেছিলেন।
টেলিভিশনে তার অভিনীত প্রথম কিশোর ধারাবাহিক নাটক ’এসো গল্পের দেশে’। তিনি হুমায়ূন আহমেদ রচিত কোথাও কেউ নেই ধারাবাহিক নাটকে বদি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য জনপ্রিয়তা পান। থিয়েটার নাটকে প্রায় ৩০টি প্রযোজনা সহ এবং ১০০০টিরও বেশি প্রদর্শনীতে অভিনয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া টেলিভিশনে প্রায় দুই হাজারের বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে নিয়মিত মামার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।[৫] অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনেও অংশ নিয়েছেন।
সম্পর্কিত খবর:
রিমান্ডে পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসামিরা